• ওকে পড়াশোনা শেখাতে অনেক কষ্ট করেছি আমরা, দাবি বউদির, ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আটক ডাক্তার উমরের মা
    বর্তমান | ১২ নভেম্বর ২০২৫
  • পুলওয়ামা: তারা পেশায় চিকিৎসক। বাড়ি পুলওয়ামায়। ১০/১১ দিল্লি বিস্ফোরণ ও ফরিদাবাদ মডিউলের ‘কমন কানেকশন’ এটাই। এক সন্দেহভাজনের নাম ডাক্তার উমর উন নবি ওরফে মহম্মদ। অন্যজন ডাক্তার মুজাম্মিল শাকিল। দিল্লি বিস্ফোরণের পরই নজরে পুলওয়ামার এই দুই চিকিৎসকের পরিবার। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উমরের বউদি জানান, তাঁর স্বামী ও শাশুড়ি সহ পরিবারের সদস্যদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। জানিয়ে গিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, বিস্ফোরক বোঝাই গাড়িটি চালাচ্ছিল উমর। সেই আত্মঘাতী জঙ্গি বলে সন্দেহ। ঘটনাস্থল থেকে মেলা দেহাংশ যে ডাক্তার উমরেরই, তা নিশ্চিত করতে তার মায়ের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। সেই কারণেই পুলওয়ামার বাড়ি থেকে তাঁকে আটক করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। পরে উমরের বাবা গুলাম নবি ভাটকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় বলে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ সূত্রে খবর। 

    অন্যদিকে, অপর সন্দেহভাজন চিকিৎসক মুজাম্মিল শাকিলের মা এদিন পুলওয়ামায় দাবি করেন, তাঁর ছেলে দোষী নয়। ছেলের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না।

    উমরের বউদি মুজামিলা এদিন জানান, দেওর সর্বক্ষণ পড়াশোনা নিয়েই থাকত। ক্রিকেট ভালোবাসত। সে এমন কাজ করতে পারে, বিশ্বাস হচ্ছে না। ওরা (নিরাপত্তা বাহিনী) আমার স্বামী, অন্য এক দেওর ও শাশুড়িকে তুলে নিয়ে গিয়েছে। উমরের সম্পর্কে জানতে চাইছিল। আমরা বলেছি, সে দিল্লিতে আছে। শেষবার গত শুক্রবার আমাদের সঙ্গে (ফোনে) কথা হয়েছিল। এরপরই পরিবারের তিনজনকে (পরে শ্বশুরকেও আটক করা হয়) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায়। উমর আমার সন্তানদের খুবই ভালোবাসত। যখনই বাড়িতে ফিরত, ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ত। সে মোটেও ওরকম ছেলে নয়। আমরা চরম দারিদ্রের মধ্যে খুব কষ্ট করে ওকে পড়াশোনা শিখিয়েছি। ও যাতে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে পরিবারকে সাহায্য করতে পারে, সেজন্য প্রচণ্ড পরিশ্রম করেছি আমরা। বাগদান হয়ে গেলেও ওর এখনও বিয়ে হয়নি। গত দু’মাস বাড়িও ফেরেনি। ওর খুব বেশি বন্ধু ছিল না। এর বেশি কিছু আমাদের জানা নেই।

    তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, অনন্তনাগের সরকারি হাসপাতালে ডাক্তারির সময় উমরের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। তার অনুপস্থিতির জন্য মারা যান এক রোগী। এই কারণে বরখাস্ত হয় উমর। এরপর সে ফরিদাবাদের হাসপাতালে যোগ দেয়।

    অপর সন্দেহভাজন চিকিৎসক শাকিলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিন তাঁর মা নাসিমা বলেন, প্রায় চার বছর আগে সে বাড়ি ছেড়েছিল। দিল্লিতে ডাক্তারি করত। অন্যদের মুখে শুনেছি, ছেলেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওর সঙ্গে আমরা দেখা করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু পুলিশ অনুমতি দেয়নি। আমার আরও এক ছেলেকেও গ্রেফতার করেছে। ওরা বলছে, আমার ছেলে দিল্লি বিস্ফোরণে সন্দেহভাজন। এবিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। আমি শুধু চাই, আমার দুই ছেলেকে ওরা ছেড়ে দিক।
  • Link to this news (বর্তমান)