অভিযোগ সত্যি হলেই সম্পূর্ণ এসআইআর বাতিল করে দেব, কড়া সুপ্রিম কোর্ট
বর্তমান | ১২ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন (এসআইআর) ইস্যুতে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে সাংসদ দোলা সেনের দায়ের করা মামলা মঙ্গলবার গ্রহণ করল সুপ্রিম কোর্ট। মামলায় দুই বিবাদী ভারতের নির্বাচন কমিশন এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে দু’ সপ্তাহের মধ্যে তাদের বক্তব্য জানাতে নোটিশও ইস্যু করল বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ। আগামী ২৬ নভেম্বর মামলার শুনানি হবে। তাই তার দুদিন আগে (২৪ নভেম্বর) কমিশনকে লিখিত জবাব জমা দিতে হবে। এদিন প্রাথমিক শুনানির পর্যবেক্ষণে বিচারপতি সূর্য কান্ত আবেদনকারীর আইনজীবীকে বললেন, ‘নির্বাচন কমিশনের জবাব দেওয়ার পর আপনাদের বক্তব্য জমা দেবেন। সেই বক্তব্যে যদি সত্যিই অভিযোগ সংক্রান্ত তথ্য প্রমাণ দিতে পারেন, তাহলে প্রয়োজনে এসআইআর প্রক্রিয়া বাতিল করে দেওয়া হবে।’ কলকাতা হাইকোর্টেও চলছে এসআইআর সংক্রান্ত মামলা। তবে যেহেতু সুপ্রিম কোর্ট একই ধরনের মামলা গ্রহণ করেছে, তাই কলকাতা হাইকোর্ট এই ইস্যুর মামলা আপাতত শুনতে পারবে না বলেই জানিয়ে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
তৃণমূল ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার, তামিলনাড়ুর শাসক দল ডিএমকের পক্ষে আর এস ভারতী এবং সিপিএমের পি শানমুগমের আবেদনও গ্রহণ করেছে শীর্ষ আদালত। ওই মামলাগুলিও ২৬ নভেম্বর শোনা হবে। শুনানির পরবর্তী তারিখ জেনে বিজেপি বিরোধী দলগুলির পক্ষে আদালতে হাজির আইনজীবী কপিল সিবাল বলেন, খুবই ভালো ব্যাপার। ২৬ নভেম্বর দেশের সংবিধান দিবস।
যদিও দোলা সেনের মামলাটি আরও আগে শোনার জন্য আবেদন করেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। আদালতে তিনি বলেন, বাংলায় এসআইআরের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। আগামী ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইনিউমারেশন ফর্ম দেওয়ার কাজ চলবে। তাই আমাদের মামলাটি আগে শোনা হোক। ভোটার তালিকা শুদ্ধকরণ প্রক্রিয়া সময় সাপেক্ষ। তা সত্ত্বেও আগামী বছর বিধানসভা ভোটের আগেই কেন এত তাড়াহুড়ো করে হবে এসআইআর? তাঁর সুর ধরে কপিল সিবালও বলেন, আমরা এই মামলায় অন্তর্বর্তী আদেশ চাইছি। তাই দ্রুত মামলার শুনানি হওয়া দরকার। আগামী ২৪ নভেম্বর শোনা হোক। যদিও বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, ২৬ তারিখ শুনানি হবে। বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, এসআইআর নিয়ে এত উদ্বেগের কী আছে? কেন করছে। কীভাবে করছে। কমিশন জবাব দেবে। তবে আপনাদের অভিযোগ যদি প্রমাণ হয়, তাহলে প্রয়োজনে এসআইআর প্রক্রিয়া বাতিল করে দেওয়া হবে। অন্যদিকে, এসআইআর ইস্যুতে ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফমর্সে’র আবেদনের শুনানিতে এদিন আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ বারবার কমিশনের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ করেন। যদিও তার বিরোধিতা করেন কমিশনের আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদি। আবেদনকারীর পক্ষে প্রশ্ন তোলা হয়, কেন ভোটার তালিকায় নাম খুঁজে পাওয়ার সহজ রাস্তা (মেশিন রিডেবল) বলছে না কমিশন? ডুপ্লিকেট ভোটারদের নাম বাতিল করার আধুনিক ব্যবস্থা থাকলেও কেন কমিশন তা করছে না? যদিও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর মন্তব্য, তথ্যের নিরাপত্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভোটার তালিকার তথ্য জনসমক্ষে না এনে, তা ব্যক্তিগত রাখাই উচিত।