• বিহার এগজিট পোল, এগিয়ে সেই নীতীশ
    বর্তমান | ১২ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: এগজিট পোলে ধরাশায়ী তেজস্বী যাদব ও রাহুল গান্ধীর ইন্ডিয়া জোট। বিহারে পুনরায় গরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গড়তে চলেছে নরেন্দ্র মোদি ও নীতীশ কুমারের যুগলবন্দির এনডিএ। প্রশান্ত কিশোরের জনসুরাজ পার্টি নিয়ে যত চর্চা হয়েছে, সেই তুলনায় প্রাপ্ত আসন হতে পারে নগণ্য। মঙ্গলবার বিহারে দ্বিতীয় তথা শেষ দফার নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে নির্বিঘ্নেই। কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত রাজ্যের ২০টি জেলার ১২২ কেন্দ্রে মোট ৬৮.৭ শতাংশ ভোট পড়েছে। বিহারে যা রেকর্ড। আগামী ১৪ নভেম্বর গণনা ও ফলপ্রকাশ। যদিও তার আগেই এদিন সন্ধ্যায় প্রকাশিত হয় বুথফেরত সমীক্ষা। কমবেশি প্রতিটি এগজিট পোলই পূর্বাভাস দিচ্ছে এনডিএর জয় হতে চলেছে। ২৪৩ আসনের বিহার ভোটে গরিষ্ঠতার সংখ্যা ১২২। কয়েকটি সমীক্ষক সংস্থার আভাস, বিরোধী মহাজোট বা মহাগঠবন্ধন (ইন্ডিয়া) ১০০-১১০টি আসনও পেতে পারে। কিন্তু বাকিদের ভবিষ্যৎবাণী, আরজেডি-কংগ্রেস-বামেরা আটকে যাবে ৯০ আসনের মধ্যেই। প্রজা পোল নামক একটি সংস্থা আবার বুথফেরত সমীক্ষায় বিজেপি-জেডিইউ জোটকে ২০০ পার করে দিয়েছে। 

    আগামী ১৪ নভেম্বর প্রকাশিতব্য প্রকৃত ফলাফলের সঙ্গে কি মিলবে এই বুথফেরত সমীক্ষা? আপাতত এটাই সমীক্ষক সংস্থাগুলির কাছে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, এদিন যারা এনডিএর বিরাট জয়ের ঘোষণা করেছে, তারা প্রত্যেকেই ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের এগজিট পোলে বিজেপিকে প্রায় ৪০০ পার করিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু প্রকৃত ফলাফলে ধরাশায়ী হয় সেই বুথফেরত সমীক্ষাই। বিজেপি একক গরিষ্ঠতা হারায় লোকসভায়। এর কয়েকমাসের মধ্যে ছিল হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচন। সেবারও এই এগজিট পোল সংস্থাগুলির পূর্বাভাস ছিল, কংগ্রেস এককভাবে গরিষ্ঠতা পেয়ে নিশ্চিত সরকার গড়ছে। কিন্তু প্রকৃত ফলাফল হয় ঠিক উলটো। এদিন চাণক্য সংস্থার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এনডিএ পাবে ১৩০ থেকে ১৩৮ আসন। মহাগঠবন্ধন পেতে পারে ১০০ থেকে ১০৮টি। এই সংস্থা ২০২৪ সালের এগজিট পোলে বলেছিল, এনডিএ পাবে ৪০০ থেকে ৪১৫ আসন। দৈনিক ভাস্করের সমীক্ষায় বলা হচ্ছে, বিহারে এনডিএ পাবে ১৪৫ থেকে ১৬০। এই সংস্থার লোকসভা ভোটের এগজিট পোলে বলা হয়েছিল এনডিএ পাবে ৩১৬ থেকে ৩৫০ আসন। আবার ম্যাট্রিজ-আইএএনএস সমীক্ষা অনুযায়ী, এবার বিহারে এনডিএ জোট পাবে ১৪৭ থেকে ১৬৭টি আসন। তেজস্বী যাদবদের ভাগ্যে জুটবে ৭০ থেকে ৯০। এই সংস্থাই লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের আগে জানিয়েছিল, এনডিএ জয়ী হবে ৩৬০ থেকে ৩৬৮ আসনে। এগজিট পোল করা সমীক্ষক সংস্থাগুলির কাছে তাই ১৪ নভেম্বর অগ্নিপরীক্ষা। যদিও এবার সব সমীক্ষাতেই দেখা গিয়েছে, গতবারের তুলনায় আসন কমছে বিজেপির। অথচ নীতীশের আসন এক ধাক্কায় অনেক বাড়তে চলেছে। এটা কীসের ইঙ্গিত? তবে কি বিজেপির একক প্রভাব কমে যাচ্ছে? নীতীশের জনপ্রিয়তা অটুট?

    এগজিট পোলের রেজাল্টই যদি প্রতিফলিত হয় প্রকৃত ফলাফলে, সেক্ষেত্রে প্রমাণিত হবে— বিহারে ২০ বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী থেকেও নীতীশ কুমারের গ্রহণযোগ্যতা এতটুকু কমেনি। এবং ইন্ডিয়া জোটের তুলনায় মানুষ এখনও বেশি আস্থা রাখছে মোদি ও নীতীশের উপরই। বিহারের এই সাফল্যের কারণ কী হতে পারে? ২০২০ সালে চিরাগ পাসোয়ান পৃথক লড়াই করে এনডিএর অনেক ক্ষতি করেছিলেন। এবার তিনি বিজেপির সঙ্গেই। অর্থাৎ বিভাজন হয়নি। তবে এসব বিশ্লেষণ তখনই প্রাসঙ্গিক হবে যদি এগজিট পোল মিলে যায়। নচেৎ নয়! 
  • Link to this news (বর্তমান)