সংবাদদাতা, নাগরাকাটা: অক্টোবরের ৫ তারিখ ভোরে প্রাকৃতিক দুর্যোগে জলঢাকা নদীর বাঁধ ভেঙে বামনডাঙা মডেল ভিলেজের কাছে কয়েকশো বাড়ি ভেসে যায়। পাশাপাশি বিশাল নজরমিনারটিও ভেঙে পড়ে। দুর্যোগের জেরে মডেল ভিলেজের কাছে একটি বড় পুকুর তৈরি হয়ে গিয়েছে। সংলগ্ন গোরুমার জাতীয় উদ্যান থেকে লোকালয়ে চলে আসা হাতি সহ বন্যপ্রাণীর উপর নজর রাখতেই ওয়াচ টাওয়ারটি বানানো হয়েছিল। কিন্তু সেটি ভেঙে পড়ায় চিন্তায় মডেল ভিলেজের বাসিন্দারা। তাঁরা দ্রুত ফের নজরমিনার তৈরির দাবি জানিয়েছেন।
মডেল ভিলেজের বাসিন্দা রঞ্জিত মাহালি বলেন, জলঢাকা নদীর বাঁধ ভেঙে আমাদের মডেল ভিলেজে বহু বাড়ি ভেসে গিয়েছে। হাতির উপর নজরদারি করার জন্য যে ৫০ ফুট উঁচু ওয়াচ টাওয়ার ছিল সেটাও ভেঙে পড়েছে। ওই ওয়াচ টাওয়ারে সন্ধ্যার পর আমরা উঠতাম। হাতি এল কি না দেখতাম। গ্রামবাসীদের সতর্ক করতাম। বনদপ্তরকে খবর দিতাম। বনকর্মীরা এসে হাতি তাড়িয়ে দিতেন। কিন্তু সেই ওয়াচ টাওয়ার ভেঙে পড়েছে। সেখানে পুকুর হয়ে গিয়েছে। এখন হাতির গতিবিধির উপর নজরদারি করা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসন যদি বিষয়টা দেখে তাহলে খুব ভালো হয়। একই কথা বলেছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য লক্ষ্মণ কাওয়ার।
নাগরাকাটার বিডিও জয়প্রকাশ মণ্ডল বলেন, আমি এখানে নতুন এসেছি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ বিভাগ গোরুমারা জঙ্গলের পাশে বামনডাঙা চা বাগানের ধারে ৫৭১টি বাড়ি তৈরি করে। নাম দেওয়া হয় মডেল ভিলেজ। যেহেতু পাশেই অভয়ারণ্য রয়েছে তাই প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওয়াচ টাওয়ার তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। মডেল ভিলেজে সোলার লাইট দেওয়া হয়েছিল। পরে বৈদ্যুতিক পোল বসিয়ে বাড়ি বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়া হয়। রাস্তাঘাট বানিয়ে দেওয়া হয়। পানীয় জলের পরিষেবা চালু করা হয়। সমস্ত কিছুই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু দুর্যোগ সব লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। এই মডেল ভিলেজের ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে ৫ অক্টোবর ভোরের প্রাকৃতিক দুর্যোগে।