শিলিগুড়িতে গ্রেফতার ‘স্পাইডারম্যান’ সিকিম থেকে পালিয়ে মিলন মোড়ে আত্মগোপন
বর্তমান | ১২ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: চুরির অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেফতার ‘স্পাইডারম্যান’। শুনতে অবাক লাগলেও মঙ্গলবার সকালে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রধাননগর থানার সাহায্যে সিকিম পুলিশের একটি টিম স্পাইডারম্যানকে গ্রেফতার করে। যদিও এই স্পাইডারম্যান কোনও কমিকস চরিত্র নয়। রীতিমতো রক্তমাংসের এই চোরের হাতসাফাইয়ের কারণে দুষ্কৃতীদের সাম্রাজ্যে তার নাম ‘স্পাইডারম্যান’।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে,সিকিমে একটি চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত ওই দুষ্কৃতী। তার প্রকৃত নাম রাকেশ রাই। সিকিমেরই বাসিন্দা সে। দীর্ঘদিন ধরে মাদকের নেশা করে। আর নেশার টাকা জোগাড় করতেই অপরাধ করতে হাতপাকায়। যেকোনও উঁচু দেওয়ালে উঠতে পটু। রেইন ওয়াটার পাইপ বেয়ে সহজেই উঁচু আবাসনের বারান্দা পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে। চুরির এই কৌশল সে রপ্ত করে নিয়েছে। অতীতে একাধিকবার পুলিশের হাতে ধরাও পড়েছে। কখনও দল বেঁধে আবার কখনও একাই চুরি করে সে।
সিকিম পুলিশের যে টিম শিলিগুড়িতে অপরাধীকে ধরতে এসেছিল সেই টিমের এক অফিসার জানিয়েছেন, ২৯ অক্টোবর গেজিংয়ে একটি বাড়িতে চুরি হয়। বাড়ি ফাঁকা থাকার সুযোগ নিয়ে এক সাগরেদকে সঙ্গী করে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছিল রাকেশ। ওই বাড়ি থেকে প্রায় ১০ ভরি সোনা, ৫০০ গ্রাম রুপো, ৬০ হাজার টাকা নগদ চুরি হয়। পরের দিন বাড়ির মালিক ফিরে এসে চুরির ঘটনাটি জানতে পেরে পুলিশের দ্বারস্থ হন। সেই মোতাবেক তদন্তে নামে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে। তাকে হেফাজতে নিয়ে তদন্ত করতেই পুলিশ জানতে পারে স্পাইডারম্যান এই ঘটনায় জড়িত। চুরির আগে প্রায় ১০ দিন এলাকায় রেকি করেছিল সে। বাড়ির মালিক বাইরে যাবেন নিশ্চিত হতেই চুরির ছক চূড়ান্ত করে। এরপরেই ২৯ অক্টোবর রাতে বাড়ির উঁচু দেওয়াল টপকে সঙ্গীকে নিয়ে চুরি করে। চুরির সামগ্রী গোপন ডেরায় রেখে সিকিম ছেড়ে গা ঢাকা দিয়ে শিলিগুড়িতে আসে।
এরপরেই পুলিশ তদন্তে নেমে মূল অভিযুক্ত রাকেশের খোঁজ নেওয়া শুরু করে। তবে পুলিশকে ফাঁকি দিতে মোবাইল সুইচঅফ করে রেখেছিল সে। পুলিশ তার বন্ধুদের মোবাইল ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করতে শুরু করে। পরে জানতে পারে স্পাইডারম্যান শিলিগুড়ির মিলন মোড় লুকিয়ে আছে। এরপরেই প্রধাননগর থানার পুলিশের সাহায্য নিয়ে এদিন চম্পাসারির মিলন মোড় থেকে রাকেশকে গ্রেফতার করে। এদিনই ধৃতকে শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে তুলে ট্রানজিট রিমান্ডে সিকিমে নিয়ে যায় ওই রাজ্যের পুলিশ। যদিও তার হেফাজত থেকে কোনও সামগ্রী শিলিগুড়ি থেকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। তবে পুলিশের সন্দেহ সিকিম ও শিলিগুড়ি দুই জায়গাতেই সে চুরি করা সামগ্রী লুকিয়ে রেখেছে। তাকে জেরা করে সেই সকল সামগ্রী উদ্ধার করার চেষ্টা চালানো হবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী অফিসাররা।
শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসিপি রাকেশ সিং বলেন, আমরা সিকিম পুলিশকে ওই অভিযুক্তকে ধরতে সাহায্য করেছি। • ছবি: এআই।