এনবিইউ-র তিন নম্বর গেটের কাছে চিতাবাঘ! হানায় জখম ১, শৌচাগারে ঘাপটি, ঢুকতেই যুবককে থাবা
বর্তমান | ১২ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, বাগডোগরা: উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ নম্বর গেটের কাছে একটি বাড়ির শৌচালয়ে লুকিয়ে ঘাপটি মেরে বসেছিল চিতাবাঘ। সকালে বাথরুমে ঢুকতেই হামলা চালায় বাড়ির ভাড়াটিয়া এক যুবকের উপর। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট দিয়ে ক্যাম্পাসের ভিতরে লাফিয়ে পালিয়ে যায় চিতাবাঘটি। সেই লাফিয়ে পালানোর ছবি বন্দি হয়েছে সিসি ক্যামেরায়। যা নিয়ে ব্যাপক আতঙ্ক জাঁকিয়ে বসেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া থেকে স্থানীয়দের মধ্যে।
মঙ্গলবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ৬টা নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ নম্বর গেটের কাছে শান্তিপুরে প্রিয়াঙ্কা দে’র বাড়িতে ভাড়া থাকা অভিষেক প্রসাদের উপর হামলা চালায় চিতাবাঘ। ঘটনায় যুবকের হাত-পা, মাথা সহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চিতাবাঘের নখের গভীর ক্ষত হয়। যে শৌচাগারে চিতাবাঘটি ঘাপটি মেরে ছিল সেই বাথরুমেই দেওয়াল রক্তের ছিটেফোঁটা দাগে ভরে গিয়েছে। জখম যুবককে উদ্ধার করে মাটিগাড়ার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়।
এদিকে, ঘটনার পরই বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানার ভিতরে ঢুকে যায় চিতাবাঘটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে এমনটাই জানতে পেরেছে এনবিইউ কর্তৃপক্ষ। খবর পাওয়ামাত্র ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বনদপ্তরের বাগডোগরা রেঞ্জের কর্মী সহ মাটিগাড়া থানার পুলিশ। দিনভর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন এলাকা সহ জঙ্গলে তল্লাশি চালিয়েও আর দেখতে পাওয়া যায়নি চিতাবাঘটি।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হস্টেলে ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে কোয়ার্টারে রয়েছে একাধিক পরিবার। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে বাড়তি নজরদারি চালাচ্ছেন এনবিইউয়ের নিরাপত্তারক্ষীরা।
বনদপ্তরের বাগডোগরার রেঞ্জার সোনম ভুটিয়া বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখি একজন জখম হয়েছেন। তবে ওই এলাকা সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন এলাকায় আমাদের টিম তল্লাশি চালিয়েও চিতাবাঘের খোঁজ পায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পিছনের দিকটায় ঝোপঝার ও চা বাগান থাকায় সেদিক থেকেই চিতাবাঘ আসতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি খাঁচা বসানো হয়েছে। স্থানীয়দের এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াচ অ্যান্ড ওয়ার্ড বিভাগের প্রধান অধ্যাপক বরুণ রায় বলেন, সিসি ক্যামেরায় চিতাবাঘটিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেখা গিয়েছে। তাই সমস্ত বিভাগ ও পড়ুয়াদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। যতক্ষণ না পর্যন্ত চিতা বাঘটি ধরা পড়েছে, ততক্ষণ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে প্রাতর্ভ্রমণ সহ বহিরাগতদের আসতে নিষেধ করা হয়েছে। অপরদিকে, এদিনই আঠারোখাই গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে এলাকায় মাইকিং করে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করা হয়।