দেব গোস্বামী, বোলপুর: প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনে জেলমুক্তির পরই আলো জ্বলল শান্তিনিকেতনের ‘অপা’ বাড়িতে। সাড়ে তিন বছর পর এবার খুলতে পারে ‘অপা’ বাড়ির জং ধরা লোহার গেট। আশায় বাড়িটি আগলে বসে থাকা পরিচারক দম্পতি।
২০২২ সালের জুলাই মাসে গ্রেপ্তার হন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তারপর থেকে সংবাদ শিরোনামে আসে এই বাড়িটি। একরকম নিস্তব্ধতায় ঢেকে গিয়েছিল বাড়িটি। অতিথি শূন্য। ম্রিয়মান ছিলেন বাড়ির পরিচারকেরাও। তাঁদের জোটেনি পারিশ্রমিক। তবু তাঁরা বাড়িটি আগলে রেখেছিলেন। অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের জামিন হয়েছে আগেই। তবে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর জামিনের খবর পেতেই পরিচারকেরা যেন কিছুটা আশার আলো দেখছেন। এবার বুঝি হয়তো অনটনের দিন শেষ হবে। মিলবে পারিশ্রমিক। আবার ঝকঝকে তকতকে হয়ে উঠবে অপা বাড়িটি। ধুলোয় পড়ে থাকা বারান্দায় যেন নতুন প্রাণ ফিরে পাবে। শীতের বাগানে আবার গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকা, ডালিয়া, অ্যাস্টার, ডেইজি, প্যানসি, ন্যাস্টারশিয়াম আর ক্যালেন্ডুলা ফুলে ভরে উঠবে। এই আশায় পরিচারক দম্পতি নিখিল দাস ও ঝর্ণা দাস।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে শান্তিনিকেতনের শ্যামবাটি মৌজায় ‘অপা’ বাড়িটি কেনেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বোলপুরের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের নথি অনুযায়ী, কলকাতার বাসিন্দা শ্যামলী ও সুসীম বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে ক্রয় করা হয় জমিটি। সেই থেকে পরিচারক দম্পতিই বাড়িটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন। ঝর্ণা বলেন, ‘‘দায়িত্ব নিয়েছিলাম এই বাড়িটির যত্ন নেওয়ার। তারপর সব উলটপালট হয়ে যায়। তবুও বাড়িটি ছেড়ে যেতে পারিনি। ভেবেছিলাম যেদিন ফিরবেন, বাড়িটি যেন ঠিক থাকে, আগের মত সুন্দর থাকে। টিভিতে দেখলাম, বাবু জেলমুক্তি পেয়েছেন। মনে হচ্ছে, এবার ভালো দিন ফিরবে। আবার মাসে মাসে মজুরি মিলবে।’’
নিখিল দাসের কথায়, ‘‘দিনমজুরির কাজ করে কোনও রকমের সংসার টেনেছি। কিন্তু অপা বাড়ির ধুলো পড়তে দিইনি। বাগানের গাছগুলো জল চেয়েছে, জল দিয়েছি। শত কষ্টের মধ্যেও বাড়িটি আগলে রেখেছি। এখন শুধু চাই, বাবু ফিরুন বাড়িতে।’’ অপা বাড়িতে ‘বাবু’ ফিরুন, অপেক্ষায় পরিচারক দম্পতি।