সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যত সময় যাচ্ছে, দিল্লি বিস্ফোরণ কাণ্ডে নতুন নতুন তথ্য হাতে আসছে তদন্তকারীদের। আর ততই হাড়হিম একটা ছবি ফুটে উঠছে। দেখা যাচ্ছে, গোটা দেশজুড়ে ছড়ানো ছিল নেটওয়ার্ক। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি তেমনই। উঠে আসছে কাশ্মীরের এক মৌলবীর নাম। সে ইরফান। মনে করা হচ্ছে এই নেটওয়ার্কের মাথা ছিল এই ইরফানই। সে আগে শ্রীনগরের সরকারি মেডিক্যাল কলেজে প্যারামেডিক্যাল স্টাফ ছিল। আর সেই সময় থেকেই সে সন্ত্রাসে তরুণদের উদ্বুদ্ধ করা শুরু করে।
তাদের জইশের ভিডিও দেখানো থেকে শুরু করে ভিডিও কল করে আফগান হ্যান্ডলারদের সঙ্গে যোগাযোগও করাত ইরফান। লালকেল্লা বিস্ফোরণ কাণ্ডে গ্রেপ্তার হওয়া দুই চিকিৎসক মুজাম্মিল ও উমরও ছিল তারই ছাত্র। বলা যায়, প্রিয় ছাত্র। তদন্তকারীদের মতে, শিক্ষিত তরুণদের মধ্যেই সন্ত্রাসের বীজ পুঁতে দেওয়া ছিল ইরফানের আসল উদ্দেশ্য। তাদের মনের ভিতরে ‘গাজওয়া-এ-হিন্দ’-এর আদর্শ রোপণ করে দিয়ে ‘স্লিপার সেল’ খোলার ‘মন্ত্র’ দিত ইরফান।
যারা গ্রেপ্তার হয়েছে তাদের জেরা করে জানা যাচ্ছে, লাগাতার হামলার ছক কষা হয়ে গিয়েছিল তাদের। এক সূত্র বলছে, ”কেবল একটা নিছক হামলাই ওদের উদ্দেশ্য ছিল না। ওরা জানে, দিল্লি রাজধানী, ক্ষমতার কেন্দ্র। তাই সেখানে ও আরও নানা গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হামলার মতলব আঁটছিল।” পাশাপাশি তদন্তকারীরা প্রমাণ পেয়েছেন, আদিল ও মুজাম্মিল দু’জনই এবছরের গোড়ায় তুরস্কে গিয়েছিল। সেই সময় হ্যান্ডলারদের সঙ্গে দেখাও করেছিল তারা। যা থেকে পরিষ্কার, আন্তর্জাতিক স্তরে মদত পেয়ে নিজেদের কর্মকাণ্ড এগিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিল এই ‘হোয়াইট কলার’ নেটওয়ার্ক। তুরস্কের পাশাপাশি বাংলাদেশের নামও উঠে এসেছে। যদিও ঢাকার তরফে জানানো হয়েছে. এই দাবি সঠিক নয়।
তদন্তকারীদের ভাবাচ্ছে ধৃত দুই মহিলা চিকিৎসকের চ্যাট হিস্ট্রি। প্রায় চারশো লাইনের মেসেজ উদ্ধার করা গিয়েছে। তাতে ধরা পড়েছে কীভাবে দুই অভিযুক্ত নিজেদের মধ্যে নেটওয়ার্কের ফান্ড ট্রান্সফার, সরঞ্জাম, সম্ভাব্য নিরাপদ স্থান নিয়ে আলোচনা চালিয়েছিল। এমনকী, তাদের মধ্যে একজন ২০২৩ ও ২০২৪ সালে বিদেশ থেকে অনলাইনে টাকা পেয়েছিল বলেও জানা যাচ্ছে।
এদিকে দিল্লি বিস্ফোরণ কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত মুজাম্মিলকে জিজ্ঞাসাবাদের পর মিলছে বিস্ফোরক তথ্য। জানা যাচ্ছে, সাধারণতন্ত্র দিবসেই বিস্ফোরণের পরিকল্পনা ছিল আততায়ীদের। আর সেজন্য লালকেল্লায় রেইকিও করে যায় তারা। এছাড়াও এবছরের দিওয়ালিতেও নাকি জনবহুল স্থানে বিস্ফোরণ ঘটানোর মতলব ছিল তাদের। কিন্তু তা কার্যকর করা যায়নি। সব মিলিয়ে যত তদন্ত এগোচ্ছে, ততই হাড়হিম তথ্য সামনে আসছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, তদন্তের মাধ্যমে এর শিকড়ে পৌঁছতে হবে। সেই কাজে যে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছেন তদন্তকারীরা, তা পরিষ্কার।