• কন্যাসন্তান হওয়ার ‘অপরাধে’ বিষ খাইয়েছিলেন ঠাকুমা! ১১ দিন পর সুস্থ হয়ে বাড়িতে সেই শিশু
    প্রতিদিন | ১২ নভেম্বর ২০২৫
  • সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: পরিবারে কন্যা সন্তান জন্মানোর ‘অপরাধে’ ওই দুধের শিশুকে বিষ খাইয়েছিলেন ঠাকুমা! সেই ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন অভিযুক্ত ওই বৃদ্ধা। এদিকে হাসপাতালে যমে-মানুষে লড়াই করছিল ওই একরত্তি। হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সরাও তাকে সুস্থ করে তোলার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। শিশুটির সুস্থতা প্রার্থনা করছিলেন পরিবারের সদস্যরাও। চেষ্টা বিফলে যায়নি চিকিৎসকদের। ঘটনার ১১ দিনের মাথায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরল ওই শিশুকন্যা।

    ঝাড়গ্রাম বেলিয়াবেড়া থানা এলাকার একটি গ্রামের এক পরিবারে ১ নভেম্বর কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু কন্যা সন্তান মানতে পারেননি ঠাকুমা। ওই সদ্যোজাতকে ঠাকুমা দুধের সঙ্গে কিটনাশক মিশিয়ে খুনের চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। তাঁকে দ্রুত উদ্ধার করে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সদ্যোজাতের মায়ের মামাবাড়ির পক্ষ থেকে ওই রাতে বেলিয়াবেড়া থানায় ওই বৃদ্ধার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করানো হয়। পুলিশ তদন্তে নেমে ওই রাতেই ঠাকুমাকে গ্রেপ্তার করে।

    জানা গিয়েছে, গত বছর বছর ষোলোর এক নাবালিকার গ্রামেরই বছর বাইশের যুবকের সঙ্গে পালিয়ে বিয়ে হয়। তারপর দু’জনেই চেন্নাই চলে যান। মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা  হওয়ার পর কয়েক মাস আগে বাপেরবাড়িতে ফিরে আসেন। কিন্তু ছেলের পরিবার প্রথমে বিয়ে মানতে রাজি হয়নি। ওই বধূ কন্যাসন্তান প্রসব করে। অভিযোগ, তাঁকে নানাভাবে বোঝানো হয় শ্বশুরবাড়ি ফিরে আাসার জন্য। তারপর তিনি কন্যা সন্তানকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে যান। ঘটনার দিন সকালে শিশুটি শাশুড়ির কাছে ছিল বলে খবর। তখনই তাকে বিষ দেওয়া হয়! অভিযুক্ত ঠাকুমা এখন জেলে রয়েছেন বলে খবর।

    গতকাল, মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে ওই শিশুকে ছুটি দেওয়া হয়। মেয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরায় আত্মহারা মা। জানা গিয়েছে, মায়ের সঙ্গে বর্তমানে মামাবাড়িতেই তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বেলিয়াবেড়া থানার পুলিশের গাড়িতে করেই নাবালিকা মায়ের পরিবারের লোকজন হাসপাতালে গিয়েছিলেন। ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আকাঙ্খা ভাস্কর বলেন, “শিশুটিকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়েছে। আমরা বাল্যবিবাহের কুফল নিয়ে ক্রমাগত সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য প্রচার চালাচ্ছি। ওই গ্রামেও বারংবার এই ধরনের প্রচার চালানো হয়েছে। ওই গ্রামের মেয়েরা যথেষ্ট সচেতন। প্রশাসন সব সময় পাশে রয়েছে।” ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমএসভিপি অনুরূপ পাখিরা বলেন, “শিশুটিকে ছাড়া হয়েছে। শারীরিক অবস্থা ভালো রয়েছে।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)