• শুভেন্দুর নন্দীগ্রামে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি পদ তুলে দিলেন অভিষেক! দুই ব্লকেই ‘বীরভূম-উত্তর কলকাতা মডেল’
    আনন্দবাজার | ১২ নভেম্বর ২০২৫
  • বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিধানসভা এলাকা নন্দীগ্রামের দু’টি ব্লকেই দলীয় সংগঠনে বীরভূম ও উত্তর কলকাতা জেলার মডেল অনুসরণ করল তৃণমূল। দু’টি ব্লকেই দলীয় সভাপতি পদ তুলে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

    বুধবার তৃণমূলের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে নন্দীগ্রামের সাংগঠনিক রদবদলের ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের কোর কমিটিতে রাখা হয়েছে অজয় কুমার মণ্ডল, বাপ্পাদিত্য গর্গ, শেখ আব্দুল আলম আলরাজি, শেখ শাহউদ্দিন, শেখ সামসুল ইসলাম, শেখ সুফিয়ান এবং সুহাসিনী করকে। নন্দীগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের কোর কমিটিতে রয়েছেন সুনীলবরণ জানা, মনোজ সামন্ত, মহাদেব বাগ, রবীন জানা, শেখ কাজিহার।

    এখানে একটি বিষয় নজর করার মতো। নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের এত দিন সভাপতি ছিলেন বাপ্পাদিত্য। তিনি আদতে উত্তরপ্রদেশের ব্রাহ্মণ। তবে তিনি নন্দীগ্রামেরই ভূমিপুত্র। তাঁকে কোর কমিটিতে রাখলেও আলাদা করে কোনও পদ দেওয়া হয়নি। শুধু তাঁকে কেন, কোর কমিটির কাউকেই কোনও পদ দেওয়া হয়নি। সবাই ওই কমিটির সদস্য। কিন্তু নন্দীগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের ক্ষেত্রে প্রাক্তন সভাপতি সুনীলবরণকে কোর কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে।

    পুজোর আগেই জেলা সংগঠনের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন অভিষেক। উৎসব মিটতেই শুরু হয় রদবদল। যা প্রায় দেড় বছর থমকে ছিল। অভিষেক তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছিলেন, নন্দীগ্রামের দু’টি ব্লকের নেতৃত্বতে নিয়ে তিনি পৃথক বৈঠক করবেন। সেই বৈঠক না-হলেও রদবদল সেরে ফেলল ক্যামাক স্ট্রিট। যাতে সিলমোহর দিয়েছেন দলের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

    যেখানে যেখানে গোষ্ঠীকোন্দল রয়েছে, সেখানে সেখানে নির্দিষ্ট কাউকে সভাপতি করার বদলে কোর কমিটি গড়ে দেওয়ার রাস্তায় হাঁটছে তৃণমূল। উত্তর কলকাতা এবং বীরভূমের জেলা সংগঠনের ক্ষেত্রেও এই পন্থা নিয়েছিল শাসকদল। অন্য একাধিক জেলার বিভিন্ন ব্লকেও একই কায়দায় চলেছে শাসকদল। এ বার দেখা গেল নন্দীগ্রামেও সেই কৌশল নিল তারা। যদিও দলের অন্যান্য শাখা সংগঠনের ব্লক কমিটির ক্ষেত্রে নন্দীগ্রামে তৃণমূল সভাপতি নিয়োগ করেছে।

    ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রাম থেকে লড়াই করেছিলেন মমতা। কিন্তু টানটান লড়াই শেষে দেখা যায় ১৯৫৬ ভোটে তিনি শুভেন্দুর কাছে হেরে গিয়েছেন। মুখে তৃণমূল ‘লোডশেডিং’ তত্ত্ব বললেও ময়নাতদন্তে উঠে এসেছিল দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের প্রসঙ্গ। সেই নন্দীগ্রামে কোন্দল বহু চেষ্টা করেও মেটানো যায়নি বলে অভিমত তৃণমূলের প্রথম সারির একাধিক নেতার। শেষ পর্যন্ত বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালে ব্লক স্তরের সাংগঠনিক রদবদলে নন্দীগ্রামের দুই ব্লকের ক্ষেত্রেই সভাপতি পদ তুলে দিলেন অভিষেক।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)