নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: প্রায় ২৩ বছর হয়ে গেল সন্ন্যাস গ্রহণ করেছেন তিনি। বৃদ্ধ বয়সে এসে নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। কিন্তু চিকিত্সার খরচ পাবেন কোথা থেকে? তাই ইংরেজিতে কবিতার বই ছাপিয়েছেন সুজয় ভট্টাচার্য। সেই বই হাতে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্সবের আঙিনায় পৌঁছছেন ওই ব্যক্তি। হাতে প্ল্যাকার্ড। সেখানে লেখা, বই বিক্রির টাকায় চিকিত্সা করাবেন তিনি।
আলোর মাঝে, ভিড়ের মাঝে গেরুয়া বসনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ৭০ পেরনো সুজয়বাবু। বলছিলেন, ‘আমি তো সন্ন্যাস গ্রহণ করেছি। বাবা বলেছিলেন, আমরা বেঁচে থাকতে সন্ন্যাস নেওয়া যাবে না। তাই ২০০২ সালে মা মারা যাওয়ার পরই সন্ন্যাস গ্রহণ করে সারা দেশ ঘুরেছি।’ এখন চোখে গ্লুকোমা ধরা পড়েছে। একটি চোখে প্রায় দেখতেই পান না। তার উপর কিডনির সমস্যা। সব মিলিয়ে এত খরচ পাবেন কোথা থেকে? তাই কবিতা লেখাকেই বেছে নিয়েছেন। নন্দন চত্বরে দাঁড়িয়ে বৃদ্ধ বলছিলেন, ‘বেহালায় এক ভক্তর বাড়িতেই আশ্রয় নিয়েছি। কবিতার বইয়ের দাম রেখেছি ২০০ টাকা।’ তবে শুভানুধ্যায়ীরা তাঁকে পরামর্শ দিয়েছেন, অনেকেই কবিতা পড়তে চান না। তাই এবার গল্প লিখুন। সেই পরামর্শ মেনে আগামীতে গল্পের বই লিখবেন বলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তাঁর কবিতার বইয়ের নাম ‘আ ফ্লোরাল গারল্যান্ড’। কিন্তু চোখে তো ভালো দেখতে পান না। বলছিলেন, ‘মুখে বলে মোবাইল ফোনে লেখালেখি করি। অল্পবিস্তর বিক্রি হচ্ছে।’
সারা বছর এভাবেই বিভিন্ন মেলা বা জনবহুল এলাকায় ঘুরে বেড়ান সুজয়বাবু। সাহিত্যের শহরও তাঁকে সাধ্যমতো আপন করে নেয়। নিজস্ব চিত্র