• ছোটো অবৈধ নির্মাণে ছাড়ের সিদ্ধান্ত বিল্ডিং বিভাগের ডিজির কাঁধে দিতে চাইছেন মেয়র
    বর্তমান | ১৩ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পুরসভা অনুমোদিত বিল্ডিং প্ল্যান অনুযায়ী নির্মাণকাজ করতে হয় শহরে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যায়, অনেকেই অনুমোদিত প্ল্যানের বাইরে গিয়ে কিছু ছোটোখাটো নির্মাণ করেন। প্ল্যানে না থাকলেও বাড়তি কার্নিস, সিঁড়িঘর বা ছাদের এক কোণে ছোট ঠাকুরঘর তৈরি করেন কেউ কেউ। কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং আইনের পরিভাষায় এগুলিকে ‘মাইনর ডেভিয়েশন’ বা ছোটোখাটো বিচ্যুতি বলে ধরা হয়। কোনও নির্মাণের এরকম অবৈধ অংশ ‘রেগুলারাইজড’ বা বৈধকরণের সংস্থান রয়েছে আইনেই। কলকাতা পুরসভার মেয়রের অথবা মেয়র পরিষদের ছাড়পত্র মিললে এই ছোটোখাটো বিচ্যুতিগুলি বৈধ হিসেবে গণ্য হয় নির্দিষ্ট জরিমানার বিনিময়ে। কিন্তু মেয়র ফিরহাদ হাকিম চাইছেন, এবার থেকে এই সিদ্ধান্ত নিন বিল্ডিং বিভাগের ডিজি। বুধবার মেয়র পরিষদের বৈঠকে তিনি এই মনোভাব ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘১০ স্কোয়ার মিটার বা ১০০ স্কোয়ার ফুট পর্যন্ত অবৈধ নির্মাণের ক্ষেত্রে রেগুলারাইজেশনের ক্ষমতা ডিজির হাতেই থাকুক।’ সব মেয়র পারিষদ এতে সম্মতি জানান। তাঁরা আশা প্রকাশ করেন, এর ফলে অন্তত মেয়র পরিষদের প্রত্যেক বৈঠকে নির্মাণ বৈধকরণ সংক্রান্ত গুচ্ছ গুচ্ছ ফাইল আসবে না। সময় নষ্টও হবে না। যদিও পুর-আইনে মেয়র ও মেয়র পরিষদকে যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তা ডিজি-কে হস্তান্তর করা যাবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। 

    পুরসভা সূত্রে খবর, গত ক’বছর ধরে পুর-প্রশাসন বেআইনি নির্মাণ নিয়ে কড়াকড়ি শুরু করায় বিল্ডিং বিভাগে রেগুলারাইজেশনের ফাইলের সংখ্যা অনেক বেড়ে গিয়েছে। প্রতি মাসে মেয়র পরিষদের বৈঠকে অন্তত ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ ফাইলই আসছে এই বিষয়ের। এক পুরকর্তা বলেন, ‘পরিস্থিতি এমন হচ্ছে যে অন্যান্য বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি আলোচনার পর্যাপ্ত সময় মিলছে না। শুধু বিল্ডিং বিভাগের রেগুলারাইজেশনের ফাইল নিয়েই কেটে যাচ্ছে সময়। সেই কারণে মাইনর ডেভিয়েশনের কেসগুলি পুরোপুরি ডিজির হাতে ছেড়ে দিতে চাইছেন মেয়র।’ পুসভার আরেক শীর্ষকর্তা বলেন, ‘পুর-আইনে এই ক্ষমতা শুধুই মেয়র ও মেয়র পরিষদকে দেওয়া হয়েছে। আগের আমলে যিনি মেয়র ছিলেন, তিনি নিজেই সেগুলি সই করে অনুমোদন দিয়ে দিতেন। যা নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। তবে ফিরহাদ হাকিম মেয়র হওয়ার পর সবটাই মেয়র পরিষদের বৈঠকে অনুমোদন করানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এখন সব দায়িত্ব ডিজিকে দিতে গেলে আইনি জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই এই সিদ্ধান্তে আসার আগে সমস্ত আইনি দিক খতিয়ে দেখতে হবে। প্রয়োজনে পুর-আইনে সংশোধনী আনা হতে পারে।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)