• স্বর্ণকার খুনে শিলিগুড়িতে ধৃত ব্লক সভাপতি, অস্বস্তি তৃণমূলে
    আনন্দবাজার | ১৩ নভেম্বর ২০২৫
  • কলকাতার স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে খুনের ঘটনায় এ বার গ্রেফতার হলেন তৃণমূলের কোচবিহার-২ ব্লকের সভাপতি সজল সরকার। বুধবার বিধাননগর পুলিশের একটি দল শিলিগুড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে। এই ঘটনার অপর অভিযুক্ত জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকের বিডিও প্রশান্ত বর্মণ সজলের মতোই কোচবিহার-২ ব্লকের বাসিন্দা।

    সজল গ্রেফতার হওয়ায় কোচবিহার জেলা তৃণমূলে ‘অস্বস্তি’ তৈরি হয়েছে। সজলের বৌদি গায়ত্রী সরকার কোচবিহার-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। এ দিন তাঁকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। ফোন ধরেননি তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকও। তবে, উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, ‘‘আইন কারও জন্য আলাদা নয়। আইন আইনের পথে চলবে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। সজল সরকার দোষী হলে শাস্তি পাবেন। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারলে বেরিয়ে আসবেন।’’ দলীয় সূত্রের খবর, সজল দীর্ঘ সময় ধরেই তৃণমূলের সঙ্গেযুক্ত রয়েছেন। তিনি কোচবিহার-২ ব্লকের ‘বাহুবলী’ নেতা হিসেবেই পরিচিত। সম্প্রতি দল নতুন করে তাঁকে ব্লক সভাপতি ঘোষণা করে। সজলকে নিয়ে এই ঘটনায় মোট তিন জন গ্রেফতার হলেন।

    এ দিকে, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ, মোবাইল টাওয়ারের অবস্থান, কল রেকর্ড থেকে শুরু করে একাধিক ব্যক্তির বয়ানকে একত্রিত ঘটনার রহস্যভেদ করতে চাইছে পুলিশ। এই ঘটনায় রাজু ঢালি এবং তুফান থাপা নামে দু’জনকে আগেই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাঁদের জেরা করে ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা হচ্ছে। তবে সূত্রের খবর, অভিযোগ মানতে নারাজ ওই দুই অভিযুক্ত। বুধবার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে। সেখানে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবেও তেমনই ইঙ্গিত দেন তাঁরা। আপাতত মূল প্রশ্ন, এই ঘটনায় বিডিও-কে কবে গ্রেফতার করা হবে?

    প্রসঙ্গত, গত ২৯ অক্টোবর নিউ টাউনের যাত্রাগাছিতে স্বর্ণ ব্যবসায়ী স্বপন কামিল্যার দেহ উদ্ধারহয়েছিল। তাঁর পরিবারের তরফে অপহরণ, খুন-সহ একাধিক অভিযোগ দায়ের করা হয়। নাম জড়ায় জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের বিডিও প্রশান্ত বর্মণের।যদিও অভিযোগ খারিজ করেবিডিও লাগাতার চক্রান্তের তত্ত্বকেই সামনে তুলে ধরেছেন। এই ঘটনার সঙ্গে বিডিও-র যোগ কতটা, তাজানার বিষয়ে পুলিশ অনেকটাই এগিয়েছে বলে সূত্রের দাবি। ঘটনার সময়ে বিডিও-র অবস্থান সম্পর্কেও প্রাথমিক ধারণায় পৌঁছনো গিয়েছে বলে খবর।

    অন্য দিকে, এ বার এই খুনের মামলায় রাজগঞ্জের বিডিও-র পাশে দাঁড়ালেন কামতাপুরলিবারেশন অর্গানাইজ়েশনের (কেএলও) প্রধান জীবন সিংহ। বুধবার সকালে জীবনের একটি ভিডিয়ো-বার্তা ছড়িয়ে পড়ে। তাতে তিনি বলেছেন, ভূমিপুত্র বলেই প্রশান্তের উপরে পুলিশি অত্যাচার হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা দেখছি, রাজগঞ্জের বিডিও প্রশান্ত বর্মণের উপরে বাঙালি পুলিশের অত্যাচার চলছে। ওরা রাজনৈতিক ভাবে লড়াই করতে পারছে না। দলীয় সন্ত্রাস দিয়েও রাজবংশীদের দমন করতে না পেরে পুলিশ দিয়ে দমনকরতে চাইছে। এখন সময় এসেছে রাজবংশীদের গর্জে ওঠার।’’ প্রশান্ত নিজেওএর আগে রাজবংশী তত্ত্ব সামনে এনেছিলেন।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)