অতীতে অনেক সময়েই বুথ ফেরত সমীক্ষার ফল ভুল প্রমাণিত হয়েছে। তবু বিহারের বুথ ফেরত সমীক্ষার আভাস (এনডিএ-র জয়ের ইঙ্গিত) দেখে পশ্চিমবঙ্গেও ভাল ফলের বিষয়ে আশাবাদী এখানকার বিজেপি নেতৃত্ব। এই রাজ্যে সাংগঠনিক ‘দৈন্য’ নিয়ে দলেই প্রশ্ন থাকলেও, নেতৃত্ব ভরসা রাখতে চাইছেন অমিত শাহের কৌশলের উপরে। যদিও, গত দু’টি নির্বাচনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যা ‘ভবিষ্যদ্বাণী’ করেছিলেন, তার থেকে পশ্চিমবঙ্গে দলকে থামতে হয়েছে অনেক দূরে। এই সূত্র ধরেই বঙ্গ-বিজেপির আশাকে ‘অলীক কল্পনা’ বলেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ বলছেন, বিহারের ফলের ‘প্রভাব’ এখানেও পড়তে পারে। সমীক্ষা নিয়ে মন্তব্য না-করলেও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের দাবি, “বিহারে আমরা ক্ষমতায় ফিরছি। এর ইতিবাচক প্রভাব পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতেও পড়বে।” এই ‘ইতিবাচক প্রভাবে’র জন্য এখানকার বিজেপি নেতৃত্ব শাহের কৌশলের উপরে ভরসা রাখছেন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য বলছেন, “স্বাধীন ভারতের সব চেয়ে বড় ভোট-কৌশলী অমিত শাহ। (পশ্চিমবঙ্গে) গত নির্বাচনে হেরেছিলাম, আমাদের দোষে! ওঁর কিছু করার ছিল না। আরকোনও ভুল নয়।”
পশ্চিমবঙ্গে গত বিধানসভা ভোটে ২০০টির বেশি এবং লোকসভা ভোটে ৩৫টি আসন দল জিতবে বলে শাহ দাবি করলেও, বাস্তবে যথাক্রমে ৭৭টি ও ১২টি আসন জিতেছিল বিজেপি। এই সূত্র ধরেই তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের মন্তব্য, “গামছারও মাঝেমাঝে ধোপা-বাড়ি যেতে ইচ্ছা হয়! পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি বিরোধী দলের মর্যাদা হারাবে।” প্রসঙ্গত, বিজেপির অন্দরেও ভিন্ন মত রয়েছে। এক নেতার মতে, “কর্মীর থেকে নেতা বেশি। এই ভাবে চললে ক্ষমতায় আসা কঠিন।”
এরই মধ্যে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতে বুধবার বিধানসভায় বিজেপির পরিষদীয় দলের সঙ্গে দেখা করেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত। সূত্রের খবর, নিজেদের জেতা আসন ধরে রাখতে এখন থেকেই বাড়ি-বাড়ি জনসংযোগের বার্তা দেন সুকান্ত। সূত্রের দাবি, সুকান্ত মনে করিয়েছেন, প্রথম বার বিধায়ক হওয়ার তুলনায় দ্বিতীয় বার জেতা কঠিন। এসআইআর আবহে মতুয়া সম্প্রদায়ের লোকজন প্রয়োজনে যাতে নাগরিকত্ব চেয়ে সংশোধিত আইনে (সিএএ) ‘নির্দ্বিধায়’ আবেদন জানান, সেই জন্যও বিধায়কদের বার্তা দিয়েছেন সুকান্ত।