শিক্ষক কই? এনবিএ স্বীকৃতিতে বাধা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের
আনন্দবাজার | ১৩ নভেম্বর ২০২৫
পড়ুয়ার সংখ্যা বেড়েছে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে। কিন্তু, খামতি থেকে গিয়েছে শিক্ষক নিয়োগে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্রযুক্তি শাখার বেশ কিছু বিভাগে পড়ুয়া ও শিক্ষক অনুপাতের ঘাটতি ন্যাশনাল বোর্ড অব অ্যাক্রেডিটেশন (এনবিএ)-এর স্বীকৃতি আদায়ের পথে বাধা বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাব্যক্তিরা। গত এক দশক ধরে সাধারণত দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিই এনবিএ স্বীকৃতি আদায়ে বেশি তৎপর হত। কিন্তু, নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা এবং পেশাগত পরিসরের চাহিদা পাল্টেছে। ফলে দেশের প্রাচীন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগেও এই স্বীকৃতি আদায় এখন অনেকটা গুরুত্বপূর্ণ।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বা কেমিক্যাল টেকনোলজির মতো বিভাগে পড়ুয়া বাড়লেও শিক্ষক অপ্রতুল। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক শিক্ষক বলেন, “৩০-৩৫ বছর আগে এম-টেক, বি-টেক মিলিয়ে ৫০ জন ছাত্রছাত্রী থাকলে শিক্ষক থাকতেন ১২ জন। যা যথেষ্টই ভাল অনুপাত। এখন এম-টেক, বি-টেক এবং কম্পিউটার সায়েন্সে এম এসসি মিলিয়ে ১১০ জনের মতো শিক্ষার্থী। অথচ, শিক্ষক ছ’জন। কেমিক্যাল টেকনোলজির অবস্থাও তথৈবচ।” তাঁর ব্যাখ্যা, পুরনো শিক্ষকেরা অনেকে অবসর নিয়েছেন, কেউ কেউ প্রয়াত। ২০০৮ সালের পরে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে শিক্ষক নিয়োগই হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠন, গবেষণার কাজ এবং সার্বিক ভাবমূর্তির জন্য ছবিটা ভাল নয় বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টেরা।
নবনিযুক্ত উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ দায়িত্ব নিয়ে বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষকের ঘাটতি দূর করার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলেছেন। দরকারে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিভাগগুলির এনবিএ স্বীকৃতির জন্য কয়েকটি বিভাগে দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া জারি করতেও তিনি তৎপর বলে জানা যাচ্ছে। প্রসঙ্গত, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কয়েকটি বিভাগেও শিক্ষকের অভাবে এনবিএ স্বীকৃতি আদায় থমকে।
ছাত্র-স্বার্থে অতি প্রয়োজনীয় এই স্বীকৃতির জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং এবং প্রযুক্তিগত শিক্ষার বিভাগগুলি কোনটি কোথায় দাঁড়িয়ে, তা নিয়মিত জরিপ করতে চান উপাচার্য। এর জন্য দায়িত্ব নিয়েই তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনবিএ সংক্রান্ত কমিটির গঠনে কিছু বদল এনেছেন।
আশুতোষ বলেন, “পুরনো কমিটি বহরে কিছুটা বড় ছিল। আমি পাশাপাশি একটি কোর কমিটিও গড়তে বলেছি।” উপাচার্যের আশা, মাস ছয়েকে কয়েকটি বিভাগের এনবিএ স্বীকৃতির জন্য আবেদন সেরে ফেলা যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এনবিএ সংক্রান্ত কমিটির কোঅর্ডিনেটর তথা কম্পিউটার সায়েন্সের অধ্যাপক নবেন্দু চাকী বলেন, “এনবিএ-র জন্য আবেদনে বছর তিনেক ধরে পঠনপাঠন, মূল্যায়ন, ছাত্র সংযোগের কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতি তৈরি করতে হয়। আমরা সেই চেষ্টায় তৎপর হয়েছি।”