নির্ভয়া প্রকল্পে শহরের অলিগলিতেও বসানো হবে সিসি ক্যামেরা
আনন্দবাজার | ১৩ নভেম্বর ২০২৫
জিমের মালিকের খোঁজে এসে জিমের ভিতরে ঢুকে গুলিচালিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, এলাকার সিসি ক্যামেরাগুলিঅকেজো হয়ে রয়েছে। যার ফলে ঘটনার দু’মাস পরেও আততায়ীদের হদিস পায়নি পুলিশ। শুধু এইঘটনাই নয়, বিভিন্ন এলাকায় আরও বেশ কয়েকটি ঘটনার ক্ষেত্রেসিসি ক্যামেরা বিকল হয়ে থাকায় তদন্তে নেমে সমস্যার মুখে পড়েছে পুলিশ। এ বার তাই শহর জুড়ে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার নতুন ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু করেছে লালবাজার।
সূত্রের খবর, নির্ভয়া প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের টাকায় এই সমস্ত ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। এরই পাশাপাশি, প্রায় দু’হাজারপুরনো ক্যামেরা বদলে সেখানে উন্নত মানের নতুন ক্যামেরাও বসানো হবে। সেই কাজ শুরু হয়েছে। পুলিশকর্তাদের আশা, চলতি মাসেই ক্যামেরা বসানোর কাজ শেষ হয়ে যাবে। এর ফলেকলকাতা শহরে পুলিশের বসানো সিসি ক্যামেরার সংখ্যা আট হাজার পেরিয়ে যাবে। নতুন ক্যামেরা বসানোর জন্য খরচ হচ্ছে প্রায় ৫৮ কোটি টাকা। এর আগে শহরের পড়ুয়াদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে নির্ভয়া প্রকল্পের অধীনে বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের সামনে বসানো হয়েছিল সিসি ক্যামেরা।
এক পুলিশকর্তা জানান, আধুনিক ও উন্নত মানের নতুন সিসি ক্যামেরাগুলির মাধ্যমে লালবাজারের কন্ট্রোল রুম থেকে নজরদারি চালানো যাবে। সেইসঙ্গে কলকাতা পুলিশের দশটি ডিভিশনের দফতর এবং স্থানীয় থানা থেকেও নজরদারি চালানো যাবে। তদন্তের কাজে কোনও ক্যামেরার ফুটেজদেখার প্রয়োজন হলে এখন আর লালবাজারে ছুটে যেতে হবে না তদন্তকারীদের। তাঁরা সংশ্লিষ্ট ডিভিশনের দফতরে গিয়েই ফুটেজ দেখে নিতে পারবেন।
পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতা শহরের বিভিন্ন বড় রাস্তা থেকে অলিগলি— সর্বত্রই সিসি ক্যামেরা বসানোয় জোর দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই অর্ধেকের বেশিজায়গায় ক্যামেরা বসানো হয়ে গিয়েছে। বাকি জায়গা চিহ্নিতকরা হচ্ছে ক্যামেরা বসানোরজন্য। এখন সেই কাজ চলছে। পুলিশ সূত্রেরখবর, নতুন কেনা ক্যামেরাগুলি ঠিক জায়গায় বসানো হয়েছে কিনা, সেগুলির অভিমুখ ঠিক দিকে রয়েছে কিনা, তা দেখার জন্য সমস্ত ট্র্যাফিক গার্ডকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে লালবাজারের তরফে। এরই পাশাপাশি, নতুন আরও কোথাও ক্যামেরা বসানোর প্রয়োজন রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখার জন্যওবলা হয়েছে অফিসারদের।প্রসঙ্গত, শহরের যে সমস্ত সিসি ক্যামেরা অকেজো হয়ে রয়েছে, সেগুলির তালিকা আগেই তৈরি করেছে লালবাজার। ওই সমস্ত ক্যামেরা ধীরে ধীরে পরিবর্তন করার কাজ শুরু করেছে পুলিশ।
লালবাজার জানিয়েছে, নির্ভয়া প্রকল্পের টাকায় এই সমস্তক্যামেরা বসানোর পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ‘অটোম্যাটিক নাম্বার প্লেট রিডার’ (এএনপিআর) ক্যামেরার সংখ্যাও বাড়ানোহচ্ছে। বর্তমানে শহরের ৮০টি জায়গায় এই এএনপিআর ক্যামেরা বসানো রয়েছে। নতুন করে আরও প্রায় ৭০টি জায়গায় এইক্যামেরা বসানোর কাজ চলছে। এএনপিআর ক্যামেরার সংখ্যা বাড়ানোর ফলে ট্র্যাফিক আইন লঙ্ঘন করা গাড়ির নম্বর সহজেই শনাক্ত করে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ব্যবস্থা নেওয়া সহজতর হবে বলে জানিয়েছেন লালবাজারের কর্তারা।