পুরুলিয়ায় ৬ শতাংশের বেশি ভোটারের হাতে পৌঁছায়নি ফর্ম, তথ্য আপলোডে হোঁচট বিএলও-দের
প্রতিদিন | ১৩ নভেম্বর ২০২৫
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: কাজের সুবিধায় রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক ১১ ই নভেম্বরের মধ্যে এনুমারেশন ফর্ম ভোটারদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময় পার হয়ে গেলেও পুরুলিয়ায় এখনও ৬ শতাংশের ভোটারের হাতে ওই ফর্ম পৌঁছায়নি। এই সংক্রান্ত কাজে বুধবার রাজ্য জুড়ে ভিডিও কনফারেন্সের মধ্য দিয়ে বৈঠক থেকে জানা যায় পুরুলিয়ায় ৯৩.৮৪ শতাংশ ভোটারের হাতে ওই ফর্ম দেওয়া গিয়েছে। ফলে ৬ শতাংশের বেশি কাজ এখনও বাকি।
এদিকে যে সকল বাড়িতে ফর্ম দেওয়া হয়ে গিয়েছে সেখান থেকে ফর্ম সংগ্রহ করার সময়ও চলে এসেছে। কিন্তু সময় এলে হবে কি? সংগৃহীত ফর্ম থেকে যে তথ্য আপলোড করতে হবে নির্বাচন কমিশনের নির্দিষ্ট ‘বিএলও অ্যাপ’-এ। কিন্তু কিভাবে আপলোড করতে হবে তা পুরুলিয়ার সমস্ত বিএলওরা এখনও প্রশিক্ষণ পাননি। প্রশিক্ষণ পেলেও তা সঠিকভাবে করতে পারছেন না বলে অভিযোগ। জেলার কয়েকটি ব্লকে এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে সেই তথ্যও বিএলও-দের কাছে আসেনি বলে অভিযোগ। সবে মিলিয়ে কমিশনের ওই অ্যাপ-এ তথ্য আপলোড নিয়ে বেশ সমস্যায় বিএলও-রা।
যদিও পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন থেকে বলা হচ্ছে, মহকুমাস্তরে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে গিয়েছে। বিডিও সহ ব্লকের আধিকারিকরা এই প্রশিক্ষণ নিয়ে ব্লকে ব্লকে বিএলও-দেরকে যেমন প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তেমনই বিএলও সুপারভাইজারকেও এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। যেখানে বিএলও-দের সমস্যা হচ্ছে তারা বিএলও সুপারভাইজারের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিচ্ছে। বিএলও সুপারভাইজার পদে ব্লকের কিছু আধিকারিককে নিয়োগ করা হয়েছে। তাছাড়া এই তথ্য আপলোডের জন্য ব্লকে ব্লকে হেল্প ডেস্ক করা রয়েছে বলে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। এছাড়া ভোটারদের এনুমারেশন ফর্ম পূরণের জন্যও পৃথক হেল্প ডেক্স রয়েছে বলে জেলা থেকে জানানো হলেও বাস্তবে বহু ব্লকে তা নেই বলে অভিযোগ। ফলে বিলও-রা যেমন সমস্যায় পড়ছেন তেমনই ভোটাররাও।
সংগৃহীত ফর্মে যে তথ্য থাকবে তা কমিশনের ‘বিএলও অ্যাপ’-এ আপলোড করতে হবে। যেমন ভোটারের নাম, ফোন নম্বর, এপিক, আধার নম্বর এমনকি ফর্মের স্ক্যান করা কপিও। এই ব্যবস্থার মধ্য দিয়েই জানা যাবে কে বৈধ ভোটার! ফলে বিএলও-র উপর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। তাই তথ্য আপলোডে তারা যদি সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত না হন তাহলে ভুল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। সবে মিলিয়ে ভোটারের ভাগ্য রীতিমত বিএলও-র উপর ঝুলে রয়েছে। বলরামপুরের এক বিএলও বলেন, “তথ্য আপলোডের জন্য আমাদেরকে কোন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। এরকম প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে সেটা আমরা জানি-ই না।” এই তথ্য আপলোডের কাজকে কমিশনের ভাষায় ‘ডিজিটাইজেশন অব এনুমারেশন ফর্ম’ বলা হয়।
পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ডিজিটাইজেশন সংক্রান্ত একটি ভিডিও জেলায় জেলায় পাঠানো হয়েছে মঙ্গলবার রাতেই। অভিযোগ, এই জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনজাতিরা ওই ফর্ম পাননি। পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কমিশনের ওই ‘বিএলও অ্যাপ’-এ ন’টি বক্স পূরণ করতে হবে। আবার কোন পরিবারের সদস্যদের যদি ২০০২-র ভোটার তালিকায় নাম না থাকে সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত তথ্য আপলোড হবে। তবে সময় এখন অনেকটা বাকি। বাড়ি বাড়ি গণনা পর্ব চলবে ৪ ঠা ডিসেম্বর পর্যন্ত।