• দশ বছর পরে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার ফের পুরসভার হাতে
    এই সময় | ১৩ নভেম্বর ২০২৫
  • এই সময়: দশ বছর পরে মধ্য কলকাতার সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার (ওয়েলিংটন স্কোয়ার) ফিরে পেল কলকাতা পুরসভা। গত এক দশকে এই প্রাঙ্গণে কখনও মেট্রোর ভূগর্ভস্থ স্টেশন, কখনও বা মেট্রোর ভেন্টিলেশন এবং ইভ্যাকুয়েশন শাফট তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য মেট্রোর কোনও কাজেই লাগেনি জায়গাটা। অবশেষে পুরসভার হাতে ফিরল ওয়েলিংটন স্কোয়ার।

    কলকাতা মেট্রোর গ্রিন লাইন অর্থাৎ ইস্ট–ওয়েস্ট মেট্রোর রুটে এসপ্ল্যানেড ও শিয়ালদহের মাঝে একটি ভূগর্ভস্থ স্টেশন তৈরির জন্যে পুরসভার কাছ থেকে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার নিয়েছিল কলকাতা মেট্রোরেল কর্পোরেশন লিমিটেড (কেএমআরসিএল)। স্টেশন তৈরির পরিকল্পনা অবশ্য বাতিল করতে হয়। এর পরে কেএমআরসিএল–এর ইঞ্জিনিয়াররা পরিকল্পনা করেন, সেখানে ভেন্টিলেশন শাফট ও ইভ্যাকুয়েশন শাফট তৈরি করা হবে।

    ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গে টাটকা বাতাস পাম্প করে পাঠাতে ভেন্টিলেশন শাফট এবং আপৎকালীন পরিস্থিতিতে যাত্রীদের সুড়ঙ্গ থেকে বার করে আনার জন্যে ইভ্যাকুয়েশন শাফট তৈরির এই পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু মধ্য কলকাতার ওই এলাকার মাটির বুনোট ইঞ্জিনিয়ারদের পরিকল্পনায় বাধ সাধে। মাটির নীচে যত বারই গর্ত খোঁড়ার চেষ্টা হয়েছে শাফট তৈরির জন্য, প্রতিবারই সেই জায়গায় ধস নেমেছে। শেষ পর্যন্ত গোটা এলাকাটি নানা ধরনের যন্ত্রাংশ ও মির্মাণসামগ্রী রাখার জায়গা হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

    কেএমআরসিএল–এর এক আধিকারিক জানিয়েছেন, স্টেশন বা শাফট, সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে কোনওটাই তৈরি না হওয়ায় ওই জায়গাটা আর ধরে রাখার কোনও মানে হয় না। তাই পুরসভাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে, দশ বছর আগে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার যে অবস্থায় ছিল, তার চেহারা আমূল বদলে গিয়েছে। অনেক জায়গাতেই আর সবুজের চিহ্নমাত্র নেই। বেশ কিছু জায়গায় রয়েছে অসম্পূর্ণ নির্মাণ। ১৯২৭–এ সুভাষচন্দ্র বসুর হাতে উদ্বোধন হওয়া বক্সিং ক্লাবটিকেও পুরোনো জায়গা থেকে সরানো হয়েছে। পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান বিভাগ) দেবাশিস কুমার বলেন, ‘সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার নতুন ভাবে গড়ে তোলা হবে। সৌন্দর্যায়ন, ল্যান্ডস্কেপিং এবং অন্য অনেক কিছুই নতুন করে করতে হবে। পরিকল্পনা রয়েছে ওখানে একটি জিমন্যাসিয়াম তৈরিরও। সবুজায়নও হবে।’

    তবে পুরসভার পক্ষে সে–সব কাজ খুব সহজ হবে না। পার্কের মধ্যে মেট্রোর যে অসম্পূর্ণ নির্মাণগুলি রয়েছে, সেগুলি ভাঙতে গেলে জমিতে ধস নামার আশঙ্কা রয়েছে কি না, আবার নির্মাণগুলি যদি রাখতে হয়, তা হলে কী করা হবে সেগুলি নিয়ে — আপাতত সেই নিয়ে ভাবনা–চিন্তা করছেন পুরসভার ইঞ্জিনিয়াররা।

  • Link to this news (এই সময়)