• আদালতে হাততালি, মক্কেলদের বের করে দিলেন বিচারপতি
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৩ নভেম্বর ২০২৫
  • আদালতে চলছিল স্কুল সার্ভিস কমিশনের একটি মামলার শুনানি। সেই শুনানি চলাকালীন হয় তুমুল হট্টগোল। বিচারপতির এজলাসে দেওয়া হয় হাততালি। এরপরেই বিরক্ত হয়ে যান আদালতের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। তৎক্ষণাৎ আইনজীবীদের মক্কেলদের কোর্টরুম ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি। পরবর্তী সময়েও এমন ধরনের মামলায় আদালতে আইনজীবীদের মক্কেলদের ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে নির্দেশ। এর পাশাপাশি এদিন আদালতে অতিরিক্ত ১০ নম্বর দেওয়া নিয়ে মামলাটি নিয়ে কোনও নির্দেশ দেননি বিচারপতি অমৃতা সিনহা।

    গত ৭ ও ১৪ সেপ্টেম্বর নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির এসএসসি-র শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা ছিল। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ফলপ্রকাশ হয় গত ৭ নভেম্বর। সেই ফলপ্রকাশের পরেই পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ছিল অনেক ভুল। এই নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়া, শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় কমিশনের তরফে চাকরিহারা যোগ্য প্রার্থীদের যে অতিরিক্ত ১০ নম্বর দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল, তার বিরুদ্ধেও একটি মামলা ওঠে আদালতে। সেই মামলার শুনানিতে বুধবার বিচারপতি অমৃতা সিনহা কোনও মন্তব্য করেননি। অতিরিক্ত ১০ নম্বর নিয়ে মামলাটি বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। সেই মামলার শুনানি হবে আগামী ২৬ নভেম্বর। শীর্ষ আদালতের নির্দেশের পরেই কলকাতা হাইকোর্ট তার শুনানি দেবে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি।

    বুধবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার ডিভিশনে বেঞ্চে এরকম অন্য একটি মামলার শুনানি ছিল। এসএসসি সংক্রান্ত মামলায় প্রথম থেকেই মানুষজনের উৎসাহ বেশি। তাই আদালতে এধরনের মামলার শুনানি চলাকালীন সবসময় ভিড় উপচে পড়ে। বুধবারও প্রতিবারের মতোই আদালতে হাজির ছিলেন অনেক লোকজন। রীতিমতো ভিড় চোখে পড়ে শুনানির সময়। এদিন মামলাকারীদের আইনজীবী হিসেবে আদালতে উপস্থিত ছিলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। মামলা চলাকালীন দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে আইনি লড়াই চলে। সেই সময় হঠাৎ এক আইনজীবীর বক্তব্য সমর্থন করতে গিয়ে একদল মানুষ হাততালি দিয়ে ওঠেন। সেই আওয়াজ কানে আসতেই বিরক্তি প্রকাশ করেন বিচারপতি সিনহা। সঙ্গে সঙ্গে মামলার মক্কেলদের বের করে দেন এজলাসের বাইরে।

    এরপরেই আদালতে উপস্থিত আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপের একটা কথোপকথন দেখান বিচারপতিকে। আইনজীবী দাবি করেন, যাঁরা হাততালি দিচ্ছিলেন, তাঁদেরকে আদালতে ভিড় জমাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। যাতে আদালতের উপর চাপ পড়ে। এরপরেই বিচারপতি সিনহার বক্তব্য, ‘এভাবে কি আর চাপ দেওয়া যায়।’ বিচারপতি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন,পরবর্তী সময়ে এই ধরনের মামলায় আইনজীবীদের মক্কেলদের এভাবে এজলাসে ঢুকতে দেওয়া হবে না। তিনি আরও বলেন যে, প্রত্যেকটা মামলার লাইভ হয়। যাঁরা কৌতূহলী তাঁরা লাইভ দেখেই কৌতূহল মেটাবেন।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)