৩৪ লক্ষ মৃতের তথ্য কমিশনকে দিয়েছেন আধার কর্তৃপক্ষ! পুরনো চিঠি টেনে ইউআইডিএআই-কে তৃণমূলের তোপ, পাল্টা বিজেপি
আনন্দবাজার | ১৩ নভেম্বর ২০২৫
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) মনোজ আগরওয়ালের সঙ্গে বুধবার বৈঠক করেছিলেন আধার কর্তৃপক্ষের (ইউআইডিএআই) অধিকর্তা শুভদীপ চৌধুরী। তার পরে শুভদীপই জানিয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের ৩৩-৩৪ লক্ষ মৃত ব্যক্তির আধার নম্বর কমিশনকে দিয়েছেন তাঁরা। তার পরেই সংসদে ইউআইডিএআই-এর পুরনো লিখিত বক্তব্য তুলে সরব হল তৃণমূল। রাজ্যের শাসকদলকে পাল্টা খোঁচা দিল বিরোধী বিজেপি-ও।
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সাকেত গোখলে আধার সংক্রান্ত একটি প্রশ্ন তুলেছিলেন সংসদের উচ্চকক্ষে। তাঁর সেই প্রশ্নের জবাবে ইউআইডিএআই ২০১৭ সালের একটি চিঠির কথা উল্লেখ করে। যাতে লেখা রয়েছে, আধার কর্তৃপক্ষ রাজ্যভিত্তিক, বছরভিত্তিক আধার নিষ্ক্রিয় হওয়ার কোনও তথ্য নিজেদের সংগ্রহে রাখে না। তৃণমূল প্রশ্ন তুলছে, যারা নিজেরাই সংসদে জানিয়েছিল, যে তারা কোনও তথ্য রাখে না, তারা কী ভাবে পশ্চিমবঙ্গের মৃতদের তথ্য কমিশনকে দিচ্ছে?
শাসকদলের আশঙ্কা, এই কায়দায় ‘পিছনের দরজা’ দিয়ে ভোটার তালিকা থেকে বৈধ ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার ছক কষা হচ্ছে। বিহারের প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূলের তরফে বলা হয়েছে, ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) হওয়ার পরে যে খসড়া তালিকা প্রকাশ হয়েছিল, সেখানেও বৈধ ভোটারদের ‘মৃত’ বলে দেওয়া হয়েছিল। পরে ফের তাঁদের নতুন করে নাম তুলতে হয়। এ রাজ্যেও তেমন ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছে তৃণমূল।
পাল্টা বিজেপি-র মুখপাত্র তথা আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি বলেন, ‘‘তৃণমূল হয়ত জানে না, ২০২৪ সালের পর থেকে আধার বিষয়ক নানা নিয়মের পরিবর্তন হয়েছে। আর মৃত ভোটারদের উপর তৃণমূলের এত ভরসা কেন? একটু জীবিত ভোটারদের উপর ভরসা করে দেখুক না!’’
কমিশনকে আধার কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছেন, ৩৩-৩৪ লক্ষ মৃতের তথ্য ছাড়াও তাঁদের দেওয়া তথ্যপঞ্জিতে ১৩ লক্ষ মানুষ রয়েছেন, যাঁদের আধার কার্ড নেই। কমিশন সূত্রের খবর, ওই তথ্য কাজে লাগবে বিশেষ নিবিড় সংশোধনীর (এসআইআর) খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পরে। যদি দেখা যায়, কোনও মৃত ব্যক্তির নামে ‘এনুমারেশন ফর্ম’ জমা পড়েছে, তা হলে যিনি ওই ফর্ম জমা দিয়েছেন, তাঁকে ডেকে পাঠানো হবে। তাঁর বক্তব্য শুনবেন ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ইআরও)। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট এলাকার বুথ লেভেল অভিসার (বিএলও)-কেও ডাকা হতে পারে বলে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর সূত্রে খবর। কমিশনের বক্তব্য, তালিকায় কোনও ভাবেই যাতে মৃত ভোটার না থাকে, তা নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ।