• আল-ফালাহের ‘এ গ্রেড’ ভুয়ো! শো-কজ ন্যাকের, ময়দানে ইডিও, ইন্টারনেট থেকে সরানো হল বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট
    বর্তমান | ১৪ নভেম্বর ২০২৫
  • নয়াদিল্লি ও ফরিদাবাদ: আরবিতে ‘আল-ফালাহ’ শব্দের অর্থ সাফল্য বা সমৃদ্ধি। যদিও লালকেল্লা বিস্ফোরণ কাণ্ডে নাম জড়ানোয় হরিয়ানার এই প্রতিষ্ঠানটি এখন গোয়েন্দা নজরে। ফরিদাবাদের বিশ্ববিদ্যালয়টিই কি জঙ্গিদের ‘মেডিকেল মডিউলে’র আঁতুড়ঘর? আতশ কাচের নীচে তাদের যাবতীয় গতিবিধি। প্রতি মুহূর্তে নতুন নতুন তথ্য সামনে আসছে। জানা যাচ্ছে, মেয়াদ উত্তীর্ণ ভুয়ো ‘এ গ্রেড’ স্বীকৃতির সার্টিফিকেট দেখিয়ে পড়ুয়া ভর্তি করত আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়। বিষয়টি সামনে আসার পর বৃহস্পতিবার আল-ফালাহ কর্তৃপক্ষকে শো-কজ করেছে শিক্ষামন্ত্রকের অধীন স্বশাসিত সংস্থা ‘ন্যাক’। এক সপ্তাহের মধ্যে জবাব তলব করা হয়েছে। বেআইনিভাবে প্রতিষ্ঠান চালানোর অভিযোগ ওঠায় ইন্টারনেট থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটও। শুধু তাই নয়, তাদের বেআইনি গতিবিধির সন্ধানে মাঠে নেমেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও (ইডি)। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুদান এবং চিকিৎসকদের লেনদেন সম্পর্কে তদন্ত করবে এই কেন্দ্রীয় এজেন্সি। তার উপর মেডিকেল মডিউলের বৃহত্তর ষড়যন্ত্রে খোঁজে এনআইএ তো রয়েছেই। সব মিলিয়ে আল-ফালাহের বিরুদ্ধে একযোগে তদন্তে নেমে পড়েছে একাধিক সংস্থা।

    দিল্লি বিস্ফোরণে আত্মঘাতী জঙ্গি চিকিৎসক উমর নবি কর্মরত ছিল আল-ফালাহতেই। এই প্রতিষ্ঠানেই কাজ করত বিস্ফোরক ও অস্ত্রশস্ত্র সহ গ্রেফতার হওয়া আরও দুই চিকিৎসক মুজাম্মিল শাকিল ও শাহিন শাহিদও। এছাড়া আল-ফালাহের সঙ্গে জড়িত আরও একাধিক চিকিৎসকের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। তবে শুধুই জঙ্গি সংসর্গ নয়, প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অন্যান্য বেআইনি কাজকর্মের অভিযোগও সামনে আসছে। ন্যাকের বক্তব্য, আল-ফালাহ কর্তৃপক্ষ ওয়েবসাইটে যে ‘এ গ্রেড’ স্বীকৃতি দাবি করছে, তা ভুয়ো। সাধারণ মানুষকে এর মাধ্যমে ভুল বোঝানো হচ্ছে। আল-ফালাহ স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির ‘এ গ্রেড’ স্বীকৃতির মেয়াদ ২০১৮ সালে শেষ হয়ে গিয়েছিল। আল-ফালাহ স্কুল অব এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের ‘এ গ্রেড’ স্বীকৃতির মেয়াদ ছিল ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত। ফলে বর্তমানে ভুয়ো সার্টিফিকেট ব্যবহারের জন্য কেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, শোকজ নোটিশ পাঠিয়ে সাত দিনের মধ্যে তা জানাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনও তদন্তের ভিত্তি উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানিয়েছে।

    কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও ইডি ডিরেক্টরের বৈঠকের পর এদিন আল-ফালাহের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে ইডিও। আর্থিক অনিয়মের সন্ধানে হবে ফরেন্সিক অডিটও। এখনও পর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ জন কর্মী ও চিকিৎসককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এদিন হরিয়ানা পুলিশের একটি টিম দিল্লির ওখলায় অবস্থিত এই বিশ্ববিদ্যলেয়ের সদর দপ্তরে গিয়ে অভিযুক্তদের সম্পর্কে নথিপত্র সংগ্রহ করেছে বলে খবর।        
  • Link to this news (বর্তমান)