ছোট ব্যবসায়ী থেকে মস্ত প্রোমোটার, গ্রেফতার হতেই সজলকে নিয়ে চর্চা
বর্তমান | ১৪ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: দীর্ঘদিন ব্লক সভাপতির নাম ঘোষণা হচ্ছিল না। সম্প্রতি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার-২ ব্লকের সভাপতি নিযুক্ত হয়েছিলেন সজল সরকার। আর সেই সজল সরকারকেই বিধাননগরে স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুনের মামলায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ বুধবার গ্রেফতার করেছে। আর এ খবর চাউর হতেই জেলাজুড়ে জোর চর্চা চলছে।
কিন্তু কে এই সজল সরকার? কী তাঁর উত্থানের ইতিহাস। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার-২ ব্লকের খাগড়াবাড়ির অত্যন্ত সাধারণ এক পরিবারের ছেলে এই সজল সরকার ওরফে সজ্জা। ডোডেয়ারহাটে তাঁর পরিবারের ছোটখাট ব্যবসা ছিল। সজল সেই ব্যবসায় থাকেননি। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই তিনি মাটির ব্যবসা করতেন। পরে জমি কেনাবেচা, প্রোমোটারি সহ নানা ব্যবসার সঙ্গে জড়ান। যত দিন গড়িয়েছে আর্থিক সচ্ছ্বলতার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক ক্ষমতা এসেছে তাঁর হাতে। তৃণমূল কংগ্রেসের খাগড়াবাড়ি অঞ্চল সভাপতি হয়েছেন। পরে ব্লক সভাপতি হন।
সম্প্রতি দলের জেলা সভাপতি সমস্ত ব্লক সভাপতিদের নাম ঘোষণা করলেও কোচবিহার ব্লক-২ এর সভাপতির নাম ঘোষণা হচ্ছিল না। যা নিয়ে দলের অন্দরের গোষ্ঠী কোন্দলই প্রকাশ্যে আসছিল। পরে অবশ্য দল সজল সরকারের নামই ব্লক সভাপতি হিসাবে ঘোষণা করে। এদিকে, সজলের যতই এই রাজনৈতিক উত্থান হয়েছে ততই আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে তাঁর, বলে মনে করছেন বিরোধীরা। তাঁর বউদি গায়েত্রী সরকার কোচবিহার-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। কিন্তু কীভাবে স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুনের মামলায় সজল সরকার জড়িয়ে গেলেন তা অবশ্য এখনও খোলসা করে কেউ বলতে পারেননি।
এবিষয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, সজল সরকারের নাম একটি মার্ডার কেসে জড়িয়েছে। পুলিশ তদন্তের স্বার্থে হেফাজতে নিয়েছে। সজল সরকারেরও অধিকার আছে নিজেকে নির্দোষ প্রমান করার। দল নিশ্চয়ই দলের মতো ব্যবস্থা নেবে।
ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সভাপতি দীপক সরকার বলেন, তৃণমূলের জমানাতেই ওঁর উত্থান। আমাদের চোখের সামনেই ওঁর আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। এদের এত দামি গাড়ি, বাড়ি এসব কোথা থেকে হল? পুলিশ বা দল কেউই এর বিরুদ্ধে সঠিক পদক্ষেপ নেয়নি। নাহলে এই পরিস্থিতি হয় না। আমরা চাই, সঠিক তদন্ত হোক। সত্য প্রকাশ হোক।
জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, শুনেছি সজল সরকারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে অফিসিয়ালি কিছু জানা নেই। উত্তর বিধানসভায় কী হবে তা দল বসে ঠিক করবে। ব্লক নেতৃত্ব ঠিক করবে সেখানকার পরিস্থিতি। একজনের জন্য দল কখনও আটকে থাকে না।
কোচবিহার জেলা পরিষদের সদস্য পরিমল বর্মন বলেন, এমন ঘটনা শুনে আমরা স্তম্ভিত। উত্তর বিধানসভায় দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হল।