ইনিউমারেশন ফর্ম পূরণে বিভ্রান্তি মেটাতে প্রশিক্ষণ বিএলএদের, তৃণমূলকে টেক্কা দিতে পারল না সিপিএম-বিজেপি, বিতর্ক
বর্তমান | ১৪ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: ইনিউমারেশন ফর্ম পূরণ নিয়ে বিভ্রান্তি চরমে। কোথায় বাবা, মা’র নাম লিখতে হবে? ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম না থাকলে কী করতে হবে? এ ধরনের বিভ্রান্তি মেটাতেই বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের বিএলএ-২দের নিয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবির করল মহকুমা প্রশাসন। তবে এদিনের শিবিরে তৃণমূল কংগ্রেসের বিএলএ-২’র সংখ্যা ছিল সর্বাধিক। সেই তুলনায় সিপিএম ও বিজেপির বিএলএ’র সংখ্যা নগন্য ছিল বলেই খবর। স্থানীয় রাজনীতিতে এনিয়েই জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
এদিন শহরের দিনবন্ধু মঞ্চের প্রশিক্ষণ শিবিরে ফর্ম পূরণ নিয়ে একাধিক সমস্যার কথা তুলে ধরেন বিএলএ’রা। অধিকাংশই প্রশ্ন ছিল, ফর্মে আত্মীয়ের নামের জায়গা কীভাবে পূরণ করতে হবে। শিবিরের প্রশিক্ষক বলেন, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় যে অভিভাবকের নাম রয়েছে, তাই এবারের ফর্মে উল্লেখ করতে হবে। ওই ব্যক্তি আবেদনকারীর বাবা বা স্বামী হতে পারেন।
সঙ্গে সঙ্গে কয়েকজন বিএলএ বলেন, বিয়ের পর যে সকল মহিলাদের নাম শ্বশুরবাড়িতে ট্রান্সফার হয়েছে। সেক্ষেত্রেও ২০০২ সালের তালিকা অনুযায়ী নাম দিতে হবে। অনেকের ঠিকানা পরিবর্তন হয়েছে। পুরনো ঠিকানাতে ফর্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন একাধিক বিএলএ।
প্রশিক্ষক জানিয়েছেন, নতুন করে নাম বা ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে। সেগুলি আগামীতে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া নির্দেশ মোতাবেকই হবে। তবে সকলকে নির্দিষ্ট ইনিউমারেশন ফর্ম ভরে দিতে হবে। আগামী ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত শেষ সময়সীমা দেওয়া হয়েছে।
এদিনের শিবিরে শিলিগুড়ি মহকুমার ওসি ইলেকশন বিপ্লব চক্রবর্তী সহ আধিকারিকরা উপিস্থিত ছিলেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, ইনিউমারেশন ফর্ম বিলির অগ্রগতি ফাঁসিদেওয়া বিধানসভা কেন্দ্রে ব্যাপক। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে প্রায় ৯৪ শতাংশ ফর্ম বিলি করা হয়েছে। শিলিগুড়ি এবং মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্র দু’টিতে ফর্ম বিলির গতি কিছুটা কম রয়েছে বলে অভিযোগ। প্রশাসনের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, মহকুমার তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রেই ফর্ম বিলি স্বাভাবিক গতিতেই চলছে। বিএলও এবং বিএলএদের সহযোগিতায় নির্দিষ্ট সময়ের আগেই এই কাজ শেষ করা হবে। এদিনের প্রশিক্ষণ শিবিরে বিএলএদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া মিলেছে।
এদিকে, শিলিগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের বুথ সংখ্যা ২৪৫টি। প্রশাসন সূত্রের খবর, এদিনের শিবিরে বিএলএ’র সংখ্যা ছিল প্রায় ৩০০ জন। তাতে তৃণমূল কংগ্রেসের বিএলএ’র সংখ্যাই ছিল ২০০ জনের আশপাশে। তৃণমূল নেত্রী তথা বিএলএ-১ পাপিয়া ঘোষ বলেন, ময়দানে তৃণমূল ছাড়া কেউ নেই। তাই ট্রেনিংয়ে ২০০’র বেশি বিএলএ তৃণমূলেরই ছিল।
বিষয়টি নিয়ে ফোন এবং এসএমএস করেও বিজেপির শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা কমিটির সভাপতি অরুণ মণ্ডলের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক সমন পাঠক অবশ্য বলেন, প্রশিক্ষণ শিবিরের চিঠি বুধবার রাতে পাঠায় প্রশাসন। সামান্য সময়ের মধ্যে যতজনকে সম্ভব, ততজনকেই শিবিরে পাঠিয়েছি। তাঁর অভিযোগ, প্রশিক্ষণ থেকে সিপিএমের অধিকাংশ বিএলএকে রুখতে তৃণমূলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ষড়যন্ত্র করেছে প্রশাসন। তাই শিবিরে ওদের লোক বেশি ছিল।