সংবাদদাতা, হরিশ্চন্দ্রপুর: স্কুল দোতলা। আছে শ্রেণিকক্ষ, বেঞ্চ, ২২ জন ছাত্রী। তাদের জন্য একজন স্থায়ী শিক্ষিকা ও একজন অতিথি শিক্ষক। তবে স্কুলে ছাত্রীরা গেলেও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়মিত দেখা পাওয়া যায় না। ক্লাসরুমে গেলে চোখে পড়বে পড়ুয়ারাই সেখানে শিক্ষক। তারাই নিচ্ছে ক্লাস। এভাবেই স্কুল শেষে মিড ডে মিল খেয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে ছাত্রীরা। হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের বনসরিয়া উচ্চ প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ের এই চূড়ান্ত অব্যবস্থা নিয়ে এবার ক্ষোভ বাড়ছে অভিভাবক, বাসিন্দাদের মনে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১০ সালে পথচলা শুরু করে এই স্কুল। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ২২ জন ছাত্রী। স্থায়ী শিক্ষিকা তনুশ্রী বিশ্বাস। তিনি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা। অতিথি শিক্ষক তহিদ ইসলাম। অভিযোগ, তাঁরা নিয়মিত স্কুলে আসেন না। ছাত্রীরা ক্লাস নিয়ে মিড ডে মিল খেয়ে বাড়ি চলে যায়। সপ্তম শ্রেণির রূপা দাস ও ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী পাখি দাস বলে, শিক্ষক-শিক্ষিকারা সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন স্কুল আসেন। যেদিন শিক্ষিকা আসেন, সেদিন শিক্ষক অনুপস্থিত থাকেন। অনেকদিন আবার কেউই আসেন না। মিড ডে মিলও নিয়মিত রান্না হয় না। মেনু চার্ট অনুযায়ী খাবার পাই না আমরা।
ছাত্রীদের দাবি, বৃহস্পতিবার অতিথি শিক্ষক এলেও শিক্ষিকাকে দেখা যায়নি। তিনিও এক ঘন্টা ক্লাস করে বাড়ি চলে যান। স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবক মিঠুন দাস ও কার্তিক দাসের কথায়, বারবার স্কুলে অভিযোগ করলেও কিছু বদলায়নি। নতুন শিক্ষকও নিয়োগ হচ্ছে না। ছাত্রীরা কিছুই শিখতে পারছে না। মিড-ডে মিল নিয়েও হচ্ছে দুর্নীতি।
প্রধান শিক্ষিকা তনুশ্রীর সাফাই, আমাকেই স্কুলের সব কাজ সামলাতে হয়। ব্লক অফিসে যেতে হয়। অসুস্থ থাকার কারণে নিয়মিত স্কুল যেতে পারছি না। বৃহস্পতিবার স্কুল যেতে পারিনি। অতিথি শিক্ষককে স্কুলে আসতে বলেছিলাম। তবে, মিড ডে মিল নিয়মিত হয়।
তহিদের দাবি, তিনি এদিন সমস্ত ক্লাস করিয়েছেন। ছাত্রীদের মিড ডে মিল খাওয়ার কথা বলে চলে যান।
হরিশ্চন্দ্রপুর চক্রের বিদ্যালয় পরিদর্শক শর্মিলা ঘোষ বলেন, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়ে মিটিং করা হয়েছে। নিয়মিত স্কুল করতে বলা হয়েছে। কেন নিয়মিত স্কুল আসেন না, খোঁজ নিয়ে দেখছি। অভিযোগ সত্যি হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষক নেই। ক্লাস নিচ্ছে এক পড়ুয়া। -নিজস্ব চিত্র