মাছি তাড়ানো স্টুডিওগুলোতে এখন ছবি তোলার লাইন, পোয়াবারো মালিকদের
বর্তমান | ১৪ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: এখন আর ছবিটবি কেউ তোলান না। নবদ্বীপের স্টুডিওগুলো ধুঁকছিল খদ্দেরের অভাবে। এসআইআর শুরু হওয়ায় সেইসব স্টুডিওতেই এখন খদ্দেরের বান ডেকেছে। মালিক ও ফটোগ্রাফারদের মুখে হাসি। ইনিউমারেশন ফর্ম ফিলাপ করতে গেলে লাগবে দু’টি পাসপোর্ট সাইজের ফটো। সেই ছবি তোলাতেই ভিড় নবদ্বীপের স্টুডিওগুলিতে।
পোড়ামাতলার এক স্টুডিও মালিক তপন দাস বললেন, একটা সময় সরস্বতী, দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে পরিবার বন্ধু বান্ধবদের নিয়ে ছবি তোলার একটা রেওয়াজ ছিল। এখন সেসব উঠে গিয়েছে। স্মার্টফোনের দৌলতে স্টুডিওতে গিয়ে ছবি তোলা অতীত। তবে হাতেগোনা কিছু মানুষ এখনও স্মৃতি ধরে রাখতে ছবি তুলতে আসেন স্টুডিওতে। ফলে স্টুডিওর ব্যবসা প্রায় বন্ধের মুখে। তবে পড়ুয়াদের ভর্তির বা ফর্ম ফিল আপের সময় ছবি তোলানো হয়। তবে এইভাবে ছবি তুলতে গত ৩০ বছরের মধ্যে আমি দেখিনি। এত কম সময় পাওয়া গিয়েছে যে, সময়মতো ডেলিভারি দিতে পারছি না। রাত জেগে কাজ করতে হচ্ছে।
রানিরচড়ার এক দম্পতি জানান, প্রায় এক ঘণ্টার উপর দাঁড়িয়ে আছি ছবি তোলার জন্য। সব দোকানেই প্রচণ্ড ভিড়। সেই জন্য চলে যেতে বাধ্য হলাম। শুক্রবার সকালে এসে দেখব। নবদ্বীপ ফাঁসিতলার বাসিন্দা কালনা কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী লিপিকা বর্মন বলেন, ভোটের জন্য পাসপোর্ট ফটো তুলতে এসেছি। ভিড় হয়ে যাবে যে কারণে সকালে এসেই দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু দোকান এখনও খোলেনি।
নবদ্বীপ এলানিয়া শিবতলার বাসিন্দা, ৭০ বছরের দীপক সাহা বলেন, আমি একটি ডাক্তারখানায় কাজ করি। বাড়িতে আগের তোলা ছবি তো আছে। কিন্তু এমনভাবে ছবি করতে হবে যে ব্যাকগ্রাউন্ড সাদা লাগবে। এইভাবে ছোটাছুটি করা আর পারছি না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাবলারির এক বাসিন্দা বললেন, দেখুন আমাদের অনেক দূর থেকে আসতে হয়েছে। কেন না গ্রামে তো আর স্টুডিও নেই। বিভিন্ন সময় সরকারি এক একটা নির্দেশ। সেই নির্দেশে পালন করতে গিয়ে আমাদের মতো গ্রাম বাংলার মানুষদের হয়রান হতে হচ্ছে।
নবদ্বীপ পোড়ামাতলা রোডের এক স্টুডিও ম্যালিক বিশ্বনাথ শিকদার বলেন, দীর্ঘদিন পর ব্যবসা ভালো হচ্ছে। সকাল সাতটায় দোকান খুলে বন্ধ করতে করতে রাত ১টা বেজে যাচ্ছে। অনবরত ছবি তুলে যাচ্ছি। ঠিকঠাক ডেলিভারি দিতে পারছি না। কেননা খদ্দেরের চাপ রয়েছে বেশি। তিন কপি পাসপোর্ট ছবি ২০ টাকা। আর ৬ কপি ৩০ টাকা। নবদ্বীপ ফটোর দোকান বেশি নেই। হরিসভা পাড়ার এক স্টুডিও মালিক সুব্রত সেন বলেন, খুবই ভিড় হচ্ছে, তা সামাল দিতে পরিবারের লোকজনও ক্যামেরায় হাত লাগিয়েছে।