আজকাল ওয়েবডেস্ক: দিল্লির লালকেল্লার কাছে ভয়াবহ বিস্ফোরণে বহু মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় সারা দেশজুড়ে সতর্কতা বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজধানীতে জঙ্গিদের বিস্ফোরক ভর্তি গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর ঘটনাটি গোটা নিরাপত্তা ব্যবস্থাকেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। ঠিক সময়ে তল্লাশি না-হওয়ার কারণে এই বিপর্যয় আরও বড় আকার নিতে পারত। তাই দিল্লির ঘটনার পরই গ্রামাঞ্চলেও নিরাপত্তা জোরদার করেছে প্রশাসন।
হুগলি গ্রামীণ পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সম্ভাব্য নাশকতার আশঙ্কায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকেই হরিপাল থানার মালিয়া এলাকায় শুরু হয়েছে কঠোর নাকা তল্লাশি। তারকেশ্বর যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ বৈদ্যবাটি–তারকেশ্বর রোডে দাঁড় করিয়ে প্রতিটি গাড়ির ডিকি খোলা থেকে শুরু করে যাত্রীদের পরিচয়পত্র পর্যন্ত খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিনের তল্লাশি অভিযানের নেতৃত্ব দেন ডিএসপি হেডকোয়ার্টার অগ্নিশ্বর চৌধুরী, তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তারকেশ্বরের সি আই প্রশান্ত চ্যাটার্জী এবং হরিপাল থানার ওসি অরূপ মণ্ডল। পুলিশের একাধিক মোবাইল টিমও এলাকায় মোতায়েন রাখা হয়।
শুধু গাড়ি নয়, রাস্তার ধারে চায়ের দোকান, খাবারের দোকান বা অন্য কোনও জায়গায় গুটিসুটি মেরে বসে থাকা ব্যক্তিদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। অনেকেই শীতের তীব্রতার কারণে মোটা পোশাক পরে বেরিয়েছেন। তবে সন্দেহজনক পোশাক, আচরণ বা অচেনা উপস্থিতি দেখলেই পুলিশ তাঁদের থামিয়ে বিস্তারিত জানতে চাইছে। পুলিশ আধিকারিকদের কথায়, “পরিস্থিতির গুরুত্বের কারণে কারও ওপর অযথা সন্দেহ নয়, তবে সতর্কতা কতটা জরুরি তা বলার অপেক্ষা রাখে না।”
পুলিশ ইতিমধ্যেই গ্রামবাসীদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছে—
কোনও অজ্ঞাত পরিচয়ের মানুষ গ্রামে দেখা গেলে সঙ্গে সঙ্গে থানায় খবর দিতে হবে।
গ্রামাঞ্চলে বাইরের কোনও ব্যক্তি ঘোরাঘুরি করলে বা আচরণে সন্দেহজনক কিছু চোখে পড়লে তা তৎক্ষণাৎ জানাতে হবে।
প্রতিটি বাড়িকে স্থানীয় থানার নম্বর ও ভিলেজ পুলিশের যোগাযোগ নম্বর হাতে রেখে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
দিল্লির বিস্ফোরণের তদন্তে ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কয়েকজন সন্দেহভাজন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে এখনও কয়েকজন জঙ্গি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে লুকিয়ে থাকতে পারে, এমন আশঙ্কায় সতর্ক রয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্য পুলিশ। তাঁদের নাশকতা ঘটানোর সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
হুগলি গ্রামীণ পুলিশের দাবি, এই ধরনের তল্লাশি আগামী কয়েকদিন আরও কঠোরভাবে চালানো হবে। পাশাপাশি উৎসবের মরসুমে ভিড় এলাকায় অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েনের পরিকল্পনাও রয়েছে।
হরিপালের মালিয়া গ্রামবাসীরা বলছেন, এত কড়া তল্লাশি আগে দেখা যায়নি। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে তাঁরা পুলিশের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন।