সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিহারের ফলপ্রকাশ হতে না হতেই গিরিরাজ সিং, সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারীরা ‘মিশন বেঙ্গলে’র কথা বলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে বিজেপির সদর দপ্তরে দাঁড়িয়ে বিহারের বিজয়বার্তায় মোদির মুখেও শোনা গেল বাংলার নাম। সাধারণ মানুষকে পাশে পেলে বাংলা থেকেও জঙ্গলরাজ উপড়ে ফেলবেন বলেই হুঁশিয়ারি মোদির। যদিও প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যকে খোঁচা দিতে ছাড়েনি তৃণমূল।
এদিন মোদি বলেন, “গঙ্গা বিহার দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলায় পৌঁছয়। বিহারই বাংলা জয়ের পথ। আমি বাংলার ভাইবোনেদের অভ্যর্থনা জানাই। এখন আমরা সকলে মিলে বাংলা থেকেও জঙ্গলরাজ উপড়ে ফেলব।”
এরই পালটা নিজেদের এক্স হ্যান্ডেলে একটি মিম ভিডিও পোস্ট করে তৃণমূল। সেখানে কাঁদো কাঁদো স্বরে মোদিকে দুঃখপ্রকাশ করতে দেখা যায়। ক্যাপশনে লেখা, ‘বাংলায় নির্বাচনের পর আমরাও কোনও একদিন হাসতে হাসতে এই তামাশা দেখব।’
মোদির মন্তব্যের ঠিক কয়েকঘণ্টা আগে বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ‘অঙ্গ-বঙ্গ-কলিঙ্গ’ জয়ের কথা। তাঁর হুঙ্কার, “অঙ্গ-বঙ্গ-কলিঙ্গ। বাংলা-বিহার-ওড়িশা। কলিঙ্গ মানে ওড়িশা হয়ে গিয়েছে। অঙ্গ বিহারও হল। এবার পালা বাংলার। বাংলার মানুষ নিশ্চয়ই সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন। বিহারের মতো বাংলার মানুষও জঙ্গলরাজ থেকে মুক্তি পেতে চান।” যদিও সুকান্তর মন্তব্যে কান দিতেই নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব।
বলে রাখা ভালো, উনিশের নির্বাচনে বিজেপির ফলাফল তুলনামূলক ভালোই হয়েছিল। বেড়েছিল আসন। তারপর থেকে একের পর এক নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে গেরুয়া শিবিরের। আগামী বছর বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। বঙ্গ বিজেপির কাছে আসন্ন ভোট যেন ‘ডু অর ডাই ম্যাচে’র মতো। এই ভোটে না জিতলে, আর কখনই বিজেপির বাংলা দখল হয়তো সম্ভব হবে না বলেই জানিয়েছিলেন তারকা নেতা মিঠুন চক্রবর্তীও। তাই মোটের উপর স্পষ্ট যে বাংলাই এখন পাখির চোখ পদ্মশিবিরের। তবে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এখনও বাংলার শাসক শিবিরকে টেক্কা দেওয়ার মতো নিজেদের প্রস্তুত করতে ব্যর্থ বঙ্গ বিজেপি। একে তো দক্ষ সংগঠকের অভাব। আবার তার উপর গোষ্ঠীকোন্দল। দু’য়ের জাঁতাকলে রাজ্য কমিটি নির্বাচন এখনও অথৈ জলে। এদিকে, SIR ‘অস্ত্র’ও বাংলায় বিজেপির জন্য বুমেরাং হতে পারে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। সবমিলিয়ে ‘দিশাহারা’ পদ্মশিবির আগামী বছরের নির্বাচনে আদৌ তেমন কিছু করে উঠতে পারে কিনা, সেটাই দেখার।