• জেলে বসেই জয়ের হাসি মোকামার ‘ছোটে সরকার’ অনন্ত সিংয়ের মুখে
    বর্তমান | ১৫ নভেম্বর ২০২৫
  • পাটনা: প্রার্থী নিজে জেলবন্দি। তাও আবার প্রতিপক্ষের সমর্থককে খুন করার মতো গুরুতর অভিযোগে। কিন্তু তার পরেও বদলাল না ছবিটা। প্রত্যাশামতোই পাটনা সংলগ্ন মোকামা কেন্দ্রে বিপুল ভোটে জিতলেন ‘বাহুবলী’ অনন্ত সিং। জেডিইউয়ের টিকিটে। প্রতিদ্বন্দ্বী বীণা দেবীকে হারিয়ে। অত্যুৎসাহী সমর্থকরা ইতিমধ্যে জয়ী অনন্তের সমর্থনে পোস্টার ঝুলিয়ে দিয়েছে। তাতে লেখা, ‘জেল কা ফাটক টুটেগা, হামারা শের ছুটেগা।’ (জেলের দরজা ভাঙবে, আমাদের সিংহ বেরিয়ে আসবে)

    বিহারের ‘বাহুবলী’ রাজনীতিতে অনন্ত সিংকে সবাই চেনেন ‘ছোটে সরকার’ নামে। কারণ? মোকামায় নাকি তাঁরই ‘সরকার’ চলে। আর অনন্ত সিং যে দলে, মোকামায় জয়ের আবির ওড়ায় সেই দলই। ২০০৫ সাল থেকেই এই প্রথা চলছে। একাধিকবার দল বদলালেও কখনও ভোটে হারেননি তিনি। এবারের ভোটে আরজেডির টিকিটে তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছিলেন বীণা দেবী। কে তিনি? মোকামার অপর এক ‘বাহুবলী’ তথা অনন্ত সিংয়ের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী সুরজভান সিংয়ের স্ত্রী। একদিকে অপর বাহুবলীর স্ত্রী, অন্যদিকে ভোটের আগে খুনের মামলায় গ্রেফতারি—দু’য়ের কারণে এবারে ফল কিছুটা অন্যরকম হতে পারে আশা করেছিল আরজেডি। কিন্তু জেলে যাওয়ার আগে অনন্ত বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, মোকামার রায় তাঁর পক্ষেই। হলও তাই। শেষ পর্যন্ত বদলাল না ছবিটা। অনন্তের কাছে বীণাদেবীকে হারতে হল ২৮ হাজার ২০৬ ভোটে। 

    শুক্রবার সকাল থেকেই অনন্ত সিংয়ের বাড়িতে ছিল উৎসবের মেজাজ। দলে দলে ভিড় জমান উৎসাহী সমর্থকরা। ভোটগণনা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে যায় ট্রেন্ড। বোঝা যায়, মোকামা আবার ‘ছোটে সরকার’-এর পাশেই। বাজি ফাটিয়ে, তাসার সঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠেন সমর্থকরা। শুরু হয় মিষ্টি বিলি। অনন্ত সিংয়ের বাড়ির সামনে বিরাট প্যান্ডেল খাটিয়ে কর্মী-সমর্থকদের পুরি-সবজিও খাওয়ানো হয়। জয়ের আশায় বুক বেধে কর্মী-সমর্থকদের জন্য রসগোল্লা, লিট্টি চোখা, ভাত-ডাল-সবজির আয়োজন করেছিলেন বীণাদেবীও। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সেই সম্ভাবনায় জল ঢেলে দেন অনন্ত সিং।

    ২০০৫ সালে প্রথম রাজনীতিতে পা রাখেন অনন্ত সিং। জেডিইউয়ের টিকিটে মোকামা থেকে জয়ী হন তিনি। ২০১০ সালেও নিজের আসন ধরে রাখেন। ২০১৫ সালে জেডিইউ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন অনন্ত। নির্দল হিসেবে লড়ে হারিয়ে দেন জেডিইউ প্রার্থীকেই। ২০২০ সালের নির্বাচনের আগে আরজেডিতে যোগ দেন এই ‘বাহুবলী’ নেতা। জেতেনও। ২০২২ সালে অস্ত্র সংক্রান্ত একটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে বিধায়ক পদ ছেড়ে দিতে হয় অনন্তকে। মোকামা আসনের উপনির্বাচনে লড়েন তাঁর স্ত্রী, নীলম দেবী। জিতে বিধায়ক হন তিনি। এবারে ফের নির্বাচনে লড়ে শেষ হাসি হাসলেন ‘ছোটে সরকার’ই। - ফাইল চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)