• কয়লা পাচার মামলা: ৩ মাসেই জানা যাবে প্রভাবশালীদের নাম, আদালতে দাবি সিবিআইয়ের
    বর্তমান | ১৫ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার কয়লা পাচার কাণ্ডে কী ধরনের ভূমিকা ছিল প্রভাবশালীদের? কয়লা পাচারের কিংপিন লালার সঙ্গে কোন কোন প্রভাবশালীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল? তাঁরা কী কী সুবিধা পেয়েছিলেন? এসব প্রশ্নের উত্তর মিলবে তিন মাসের মধ্যেই। শুক্রবার বিচারকের একাধিক প্রশ্নের জবাবে এমনটাই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। 

    এদিন আসানসোলের সিবিআই বিশেষ আদালতে মামলাটি উঠতেই বিচারক অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় কেস ডায়েরি দেখে বলেন, ‘চার ধরনের অভিযুক্ত রয়েছে। এক, সরকারি আধিকারিক। যাঁরা কয়লা চুরি করতে দিয়েছেন। দুই, যাঁরা কয়লা লুট করেছেন। তিন, যাঁরা চোরাই কয়লা কিনেছেন। চার, প্রভাবশালী, যাঁরা গোটা চক্রটি চালাতে সাহায্য করেছেন। তিনটি স্তরে গ্রেফতার হলেও প্রভাবশালীদের বিষয়টা কী হবে? এঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত কি চলতেই থাকবে?’ শুনানির শেষ ভাগে সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার উমেশ কুমারকে স্পষ্টভাবে বিচারক জিজ্ঞাসা করেন, ইনফ্লুয়েন্সিয়াল বা প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে তদন্ত কবে শেষ হবে? তদন্তকারী অফিসার জানান, তিন মাসের ম঩ধ্যেই তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ হয়ে যাবে। 

    এদিকে, বহুদিন পর কয়লা পাচার মামলায় আদালতে একাধিক নতুন তথ্য সামনে এনেছে সিবিআই। ২০২৪ সালের ৩০ জুন এই মামলার শেষ চার্জশিট দিয়েছিল তারা। এদিন তদন্তকারী অফিসারকে কেস ডায়েরি নিয়ে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক। আগের শুনানিতেই বিচারক উল্লেখ করেছিলেন, চার্জশিট জমা করার পর তদন্তে নতুন কী কী ওঠে এল, তা যেন জানানো হয়। সেই মতো কেস ডায়েরি খুলে প্রকাশ্য এজলাসেই নতুন কিছু তথ্য বিচারকের নজরে আনেন তদন্তকারী অফিসার। বিচারক প্রতিটি নথি খুঁটিয়ে দেখে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করেন, তথ্যগুলি আগেই দেওয়া নাকি চার্জশিট জমা পড়ার পরের ঘটনা। সেই সূত্রেই জানা যায়, সিবিআইয়ের নজরে এসেছেন আরও এক সরকারি আধিকারিক। এই সিন্ডিকেটে যাঁর বড় ভূমিকা ছিল। বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটও বিচারকের সামনে তুলে ধরা হয়। এর আগে ১২ জন ইসিএলের উচ্চপদস্থ আধিকারিক গ্রেফতার হয়েছেন এ‌ই মামলায়। এবার সেই আধিকারিককে নিয়ে নানা মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে। চোরাই কয়লা কেনার জন্য আগেই ১০টি সংস্থাকে অভিযুক্ত করেছিল সিবিআই। আরও কিছু সংস্থার নাম উঠে এসেছে, যারা চোরাই কয়লা কিনেছিল। এদিন বিচারকের সামনে তাও কেস ডায়েরির পাতা খুলে দেখানো হয়। বিচারক ১৭ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন। 

    এদিন এক অভিযুক্তের আইনজীবী শেখর কুণ্ডু সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় উল্লেখ করে বলেন, ‘অসম্পূর্ণ চার্জশিট কিন্তু গ্রহণযোগ্যতায় আনা যায় না। যাঁদের বিরুদ্ধে এই মামলায় ট্রায়াল চলছে, সিবিআই ফের তাঁদের ডেকে পাঠাচ্ছে।’ একই অভিযোগ আর এক আইনজীবী সোমনাথ চট্টরাজেরও। কেন এমন করা হচ্ছে, সিবিআ‌ই঩-কে প্রশ্ন করেন বিচারক। সিবিআই জানিয়েছে, চোরাই কয়লা কিনেছে যে সংস্থা, তার অধিকর্তা হিসেবে ট্রায়াল চলছে। পরবর্তীকালে তদন্তে উঠে এসেছে, তিনি ব্যক্তিগতভাবেও কয়লা পাচারে যুক্ত। সেই হিসেবে ফের তাঁদের ডাকা হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)