• সমাজমাধ্যমে ফের সক্রিয় জেলবন্দি লস্কর জঙ্গি তানিয়া পারভিনের ‘র‍্যাডিক্যাল গ্রুপ’, যোগ দিল্লি বিস্ফোরণের সঙ্গেও!
    বর্তমান | ১৫ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তোইবা এবং জয়েশ-ই-মহম্মদের হ্যান্ডলাররা নতুন করে সামাজিক মাধ্যমে ভারত বিরোধী গ্রুপ তৈরি করেছে। যে গ্রুপগুলিতে দেশের বিভিন্ন অংশের পাশাপাশি বাংলারও বিশ্ববিদ্যালয়, কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পড়ুয়া বেশ কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। রয়েছে কাশ্মীরের বেশ কয়েকজন পড়ুয়াও। দিল্লি বিস্ফোরণ পরবর্তী পর্যায়ে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে নজরদারি পর্বে এই সমস্ত গ্রুপের হদিশ পেয়েছেন গোয়েন্দারা। এমনকি ‘ছানবিন’ পর্বে গোয়েন্দারা জেনেছেন, এই গ্রুপগুলির এডমিন হিসেবে যাদের নাম সামনে আসছে, তাদের অনেকেই বাদুড়িয়া থেকে ধৃত লস্করের অনলাইন রিক্রুটার তানিয়া পারভিনের সঙ্গে একসময়ে যুক্ত ছিল। তানিয়া গ্রেপ্তারের পর বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রায় ৭০টি র‌্যাডিকাল গ্রুপের বেশ কয়েকটি ফের সক্রিয় হয়েছে। গোয়েন্দাদের হিসেবে সংখ্যাটা প্রায় ২০। এই পর্বে যে চাঞ্চল্যকর ইঙ্গিত মিলেছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে, এহেন একটি র‌্যাডিকাল গ্রুপের সঙ্গে দিল্লি বিস্ফোরণের যোগসূত্র রয়েছে।   

    র‌্যাডিকাল এই গ্রুপগুলি পরিচালিত হচ্ছে পাক অধিকৃত কাশ্মীর, পাক পাঞ্জাব প্রদেশের সারগোদা, আফগানিস্তানের হেরাট এবং ইরাক, ইরান, তুরস্ক এবং তিউনিসিয়া থেকে। গ্রুপগুলিতে কট্টর ভারত বিরোধী প্রচার চলছে। সঙ্গে পাকপন্থী জঙ্গি সংগঠন লস্কর ও জয়েশের গুণগান।  এমনকি কীভাবে বোমা বানিয়ে প্রাণঘাতী হামলা চালানো যাবে, তার আলাপ আলোচনা চলছে গ্রুপগুলিতে। গোয়েন্দারা মনে করছেন, এই গ্রুপগুলি আসলে লস্কর ও জয়েশের অনলাইন রিক্রুটার হিসেবে কাজ করছে। এই পর্বে উঠে এসেছে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের কোটমোমেনের বাসিন্দা আয়েশা ওরফে আয়েশা বুরহান ওরফে আয়েশা সিদ্দিকি নামে লস্করের এক মহিলা জঙ্গির নাম। র‌্যাডিকাল এই গ্রুপগুলির কোঅর্ডিনেটর হিসেবে কাজ করছে এই মহিলা। ২০২০ সালে ১৮ মার্চ বাদুড়িয়া থেকে ধৃত তানিয়াকে জেরা করে মিলেছিল আয়েশার নাম। তানিয়ার বিরুদ্ধে আদালতে যে চার্জশিট জমা দিয়েছিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ, তাতেও নাম রয়েছে এই আয়েশার। দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় নানা এজেন্সির মোস্ট ওয়ান্টেড লিস্টে রয়েছে এই মহিলা। দিল্লি বিস্ফোরণের পর ‘ছানবিন’ পর্বে যে র‌্যাডিকাল গ্রুপগুলির হদিশ মিলেছে, তার সব ক’টির সঙ্গেই কোনও না কোনওভাবে জড়িয়ে রয়েছে আয়েশার নাম। তবে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে আয়েশা নতুন নাম নিয়েছে বলে গোয়েন্দারা জেনেছেন। গোয়েন্দারা জেনেছেন জয়েশ প্রধান মাসুদ আজহারের বোন সাইদা আজহারের সঙ্গেও আয়েশার যোগাযোগের তথ্য সামনে আসছে। তবে র‌্যাডিকাল গ্রুপের তদন্তপর্বে এ রাজ্যের জেলে বন্দি বাদুড়িয়ার তানিয়া পারভিন এবং কর্ণাটকের উত্তর কন্নড় জেলার শিরসির বাসিন্দা  সৈয়দ এম ইদ্রিশ ওরফে ইদ্রিশ ওরফে মুন্না কোনওভাবে র‌্যাডিক্যাল গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে কি না, তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। এই আবর্তেই বাংলাদেশের এক ‘রহস্যময়ী’র (আয়েশা নাম নিয়ে বারাসতে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে) সঙ্গে এরাজ্যের জেল থেকে যোগাযোগের তথ্য সামনে এসেছে।
  • Link to this news (বর্তমান)