পাটনা, ১৫ নভেম্বর: বিহারে দাপটের সঙ্গে নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখল এনডিএ জোট। অন্যদিকে বিহারের প্রধান বিরোধী দল আরজেডি ২০১০ সালের পর থেকে সবচেয়ে খারাপ রেজাল্ট করেছে। মূলত ভোট কাটাকাটির অঙ্কই বিহারে আরজেডির ভরাডুবির প্রধান কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য বলছে, লালু পুত্র তেজস্বী যাদবের দল ২৩ শতাংশ ভোট পেয়েছে। যা বিজেপির চেয়ে ২.৯২ শতাংশ এবং জেডিইউর চেয়ে প্রায় ৩.৭৫ শতাংশ বেশি। তবে আরজেডি গত নির্বাচনে ১৪৪ জন প্রার্থী দাঁড় করিয়ে ২৪৩ আসনের মধ্যে ৭৫টি জিতেছিল। তবে এবাবে ১৪১টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মাত্র ২৫টি আসনেই তারা জয়লাভ করেছে। যা ২০১০ সালের পর বিহার নির্বাচনে তাদের দ্বিতীয় খারাপ ফলাফল। সেবার মাত্র ২২টি আসন পেয়েছিল তারা। যদিও আরজেডির তরফে নিজেদের এক্স হ্যান্ডলে জানানো হয়েছে, নির্বাচনে জয় বা পরাজয় একটি প্রক্রিয়া মাত্র। পরাজয়ে দুঃখ প্রকাশ অথবা জয়ে অহংকার করার কোনও অর্থ নেই। রাষ্ট্রীয় জনতা দল সাধারণ মানুষের দল। বিরোধী জোট মহাগঠবন্ধনের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী তেজস্বী যাদব। এনডিএ প্রার্থী সতীশ কুমারের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর রাঘোপুরে জয়লাভ করেন। বিহার নির্বাচনের ফলাফলে বিরোধী জোট মহাগঠবন্ধনও পুরোপুরি ভাবে ব্যর্থ হয়েছে। মাত্র ৬টি আসনেই জয়ের মুখ দেখেছে হাত শিবির। যা বিহারের নির্বাচনী ইতিহাসে তাদের অন্যতম খারাপ ফলাফল। এবারে সিপিআই(এমএল) এল জিতেছে ২টি আসন, সিপিআই(এম) ১টি এবং সিপিআই শূন্য। ফলে মহাগঠবন্ধনের মোট আসন সংখ্যা মাত্র ৩৫-এ শেষ হয়ে যায়।অন্যদিকে, এনডিএ জিতেছে ২০২টি আসন, যার মধ্যে বিজেপি পেয়েছে ৮৯টি, জেডিইউ ৮৫টি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চিরাগ পাসোয়ানের লোক জনশক্তি পার্টি (রাম বিলাস) ১৯টি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন রাম মাঝির হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা ৫টি এবং রাজ্যসভার সাংসদ উপেন্দ্র কুশওয়াহার রাষ্ট্রীয় লোক মোর্চা ৪টি।২০২০ সালে বিজেপির ভোটের পরিমাণ ১৯.৪৬ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ২০.০৭ শতাংশে। যদিও গত নির্বাচনে তারা ১১০টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। এবারে কিন্তু সেই সংখ্যা ১০১টি। জেডিইউ-র ভোট ২০২০ সালে ছিল ১৫.৩৯ শতাংশ। এবারে তা বেড়ে হয়েছে ১৯.২৬ শতাংশে। অপরদিকে, প্রশান্ত কিশোরের জন সুরাজ পার্টি এবং মুকেশ সাহানির বিকাশশীল ইনসান পার্টি (ভিআইপি) তাদের খাতাই খুলতে পারেনি। প্রসঙ্গত, গত ৬ ও ১১ নভেম্বর বিহারে দুই ধাপে হয়েছে ভোটগ্রহণ। ভোটারদের উপস্থিতি রেকর্ড করা হয়েছিল ৬৬ শতাংশেরও বেশি। যা ১৯৫১ সালের পর বিহারে সর্বোচ্চ। পুরুষ ভোটারদের ভোটদানের হার ছিল প্রায় ৬২.৮ শতাংশ। সেই নিরিখে মহিলা ভোটারদের ভোটদানের হার ছিল কিছুটা বেশি, ৭১.৬ শতাংশ।