সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১০১ আসনে লড়ে ৮৯ আসনে জয়। স্ট্রাইক রেট ৮৮.১ শতাংশ। ১০১ আসনে লড়ে ৮৫ আসনে জয়। স্ট্রাইক রেট ৮৪.১ শতাংশ। বিহারে জেডিইউ এবং বিজেপি, দুই বৃহত্তম দলের এই স্ট্রাইক রেট ভারতীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে বড় নির্বাচনের ক্ষেত্রে রেকর্ড। ছোট রাজ্য, বা বিতর্কিত রাজনৈতিক পরিস্থিতি না হলে এই ধরনের স্ট্রাইক রেট সচরাচর হয় না। বিহারে বিজেপির এই স্ট্রাইক রেট নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই গুচ্ছ প্রশ্ন উঠছে।
এনডিএর এই জয় গতবারের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বৃহৎ। আর এতেই প্রশ্ন উঠেছে, বিপুল জয়ের পিছনে অন্য ফ্যাক্টর কাজ করেনি তো? বিজেপির অস্বাভাবিক স্ট্রাইক রেট রহস্যজনক বলে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষও। ১০১ আসনে লড়াই করে ৮৯টিতে জয় পেয়েছে বিজেপি। আর একই সংখ্যক আসনে লড়াই করে নীতিশ জিতেছেন ৮৫ আসনে। কুণাল প্রশ্ন করছেন, “বিজেপি যখন এত আসনই জিতছে তাহলে একা লড়াই না করে জোট করল কেন? তাহলে তো বিজেপির কেউ মুখ্যমন্ত্রী হতে পারতেন” আসলে পরিকল্পিত উপায়ে নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে ভোটার তালিকা সংশোধনের মাধ্যমে বিপুল ভোট লুঠ বলে মনে করেন তিনি। না হলে এই স্ট্রাইক রেট আসে কি করে?
বিজেপির স্ট্রাইক রেট নিয়ে ৮৫ সালে রাজীব গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের জয়ের প্রসঙ্গও টেনে আনেন কুণাল ঘোষ। বলেন, ভারতবর্ষের ইতিহাসের ১৯৮৪ রাজীব গান্ধীর সময়ে কংগ্রেস ৫১৪ টার মধ্যে ৪০৪ আসন জিতেছিল। জয়ের হার ৭৮.৬ শতাংশ। বিজেপি সর্বোচ্চ জয় ছিল ২০১৯ সালে। ৫৪২ টায় লড়াই করে বিজেপি জিতেছিল ৩০৩ আসন। ৫৫.৯ শতাংশ। ফলে এর পিছনে রহস্য থাকতেই পারে বলে সন্দেহপ্রকাশ করেন।
অন্যদিকে, বিহারে বিজেপি-বিরোধী মহাজোটের বিপর্যয়ে কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম শরিক দলনেতা অখিলেশ যাদব সরাসরি ভারতের নির্বাচন কমিশন এবং ভোটার তালিকা সংশোধনকে দুষলেন। সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ শুক্রবার এক এক্সবার্তায় তালিকা সংশোধন ইস্যুতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। তিনি লিখেছেন, “বিহারে যে খেলা হয়েছে, তা পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ কিংবা অন্য রাজ্যে আর সম্ভব হবে না। কারণ, নির্বাচনী ষড়যন্ত্র মানুষের কাছে ফাঁস হয়ে গিয়েছে। এখন থেকে আমরা আর ওদের এই খেলা খেলতে দেব না। সিসিটিভির মতোই আমাদের পিপিটিভি অর্থাৎ পিডিএ প্রহরীরা বিজেপির মতলব ব্যর্থ করতে অতন্দ্র পাহারা দেবে। বিজেপি কোনও দল নয়, পুরোপুরি ছল।” সমাজবাদী পার্টির নেতার সুরেই কংগ্রেসের পবন খেরা ও অশোক গেহলটও স্পষ্টতই নির্বাচন কমিশনকে দুষেছেন এই ফলাফলের জন্য। তাঁরা বলছেন, “ভোটের ঠিক আগেই বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধন হয়েছে করা হয়েছে। ৬০ লক্ষ ভোটারকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। যার মানে মোট ভোটারের ১০ শতাংশ বাদ গিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই বিরোধী ভোটার। ভোটচুরি আরেকটি পন্থা হয়ে গিয়েছে স্যর। এর জন্যই বিজেপি-জেডিইউ জিতেছে। গণতন্ত্রকে হত্যা করার জন্য এটা এখন বিজেপির নয়া অস্ত্র। নির্বাচন কমিশন বিক্রি হয়ে গিয়েছে। কমিশন এখন বিজেপির হয়ে কাজ করছে।”