বকেয়া ৩০০ টাকা আদায়ে লোহার রডের মার! বাগনানে নিহত যুবক, অভিযুক্ত ৪
প্রতিদিন | ১৫ নভেম্বর ২০২৫
মণিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: বাইক সারানো বাবদ মাত্র ৩০০ টাকা বকেয়া। সেই টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে এক যুবককে মারধর এবং মাথায় রড দিয়ে মেরে খুনের অভিযোগ উঠেছে বাগনান এলাকায়। অভিযুক্ত চারজন।
এই চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, একটি মোটরসাইকেল সারানোর দোকানের কাজের টাকা বাকি রেখে শেখ আব্দুর রহমান নামে ওই যুবক অন্য একটি দোকানে ফের বাইক সারাতে দেন। সেটা দেখতে পান আগের দোনাকের মালিক। এর পরেই ওই দোকানদার-সহ কয়েকজন মৃত যুবককে ঘিরে ধরে মারধর করে। বচসার সময় হঠাৎই লোহার বস্তু দিয়ে মাথায় আঘাত করে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়।
আহত যুবককে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনাটি বাগনান থানার পশ্চিম বাইনানের হাবাল এলাকার। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মারধরের ঘটনা ঘটে। তারপর শুক্রবার রাতে ওই ব্যক্তি মারা যান। পুলিশ এই ঘটনায় খুনের মামলার দায়ের করেছে। তদন্ত শুরু করেছে তাঁরা। তবে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় পাঁচ মাস আগে শেখ আব্দুর রহমান নামে ওই যুবক মতাব্বর মল্লিকের মোটরসাইকেল সারানোর দোকানের বাইক সারিয়েছিলেন। সেই সময় দুই হাজার ৮০০ টাকা বিল হয়। কিন্তু সেই সময় দুই হাজার ৫০০ টাকা দিয়েছিলেন আব্দুর রহমান। ৩০০ টাকা বাকি ছিল। এরপর তিনি নেপালে কাজে চলে যান।
জানা গিয়েছে কিছুদিন আগে তিনি বাড়ি আসেন। অভিযোগ, মোটরসাইকেলটি যথাযথভাবে সারানো না হওয়ায় তিনি অন্য একটি দোকানে ফের সারাতে দেন। এই ঘটনা দেখে ফেলে প্রথম দোকানদার। সন্ধ্যায় আব্দুর রহমান বাইকটি আনতে গেলে তাঁকে দেখে ফেলেন প্রথম পাওনাদার মতাব্বর মল্লিক। তাঁরা আব্দুর রহমানের পিছু নিয়ে, তাঁকে ঘিরে ধরে টাকা চায়। সেই সময় তাঁদের মধ্যে বচসা থেকে শুরু হয় ধস্তাধস্তি।
অভিযোগ তাঁদের মধ্যে একজন লোহার একটি সকার খুলে আব্দুর রহমানের মাথায় মারে। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে। তাঁকে প্রথমে বাগনান গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে কলকাতা স্থানান্তরিত করা হয়। পরিবারের লোকেরা তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করেন। বৃহস্পতিবার রাতেই তাঁর মাথায় অস্ত্রপচার হয়। পরদিন শুক্রবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।
আব্দুর রহমানের মা শেখ ফরিদা বলেন, ‘৩০০ টাকার জন্য যে ওরা আমার ছেলেকে মেরে ফেলবে আমি তা কল্পনা করতে পারছি না। শুনেছি ছেলে রক্তাক্ত হয়ে যাওয়ার পর মাটিতে পড়ে গেলেও ওরা লাথি-ঘুঁসি মারতে থাকে। ওরা অমানুষের মত মারধর করেছে আমার ছেলেকে। আমি ওদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।’ তিনি দাবি করেন, ‘পুলিশ ওদের শাস্তির ব্যবস্থা করুক।’ পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে। তাদের ধরতে তল্লাশি করা হচ্ছে।