বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য-অরিজিৎ গুপ্ত: কাজ করাতে গিয়ে তাদের উপর মানসিক চাপ দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। আর এই অভিযোগ তুলে বিক্ষোভে বিএলওরা। যা নিয়ে আজ শনিবার একেবারে উত্তাল হয়ে ওঠে শিলিগুড়ির দীনবন্ধু মঞ্চ। একেবারে মাটিতে শুয়ে পড়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিএলওরা। তাঁদের অভিযোগ, দিনের পর দিন তাঁদের উপর বাড়তি চাপ দেওয়া হচ্ছে। গভীর রাতে ফোন করে কমিশন থেকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি আন্দোলনকারী বিএলওদেরও। শুধু শিলিগুড়ি নয়, হাওড়ার টিকিয়াপাড়ার ইস্ট ওয়েস্ট বাইপাসের সরকারি দপ্তরে ডিজিটাল ডেটা এন্ট্রির প্রশিক্ষণ নিতে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিএলওরা।
আজ শিলিগুড়ির দীনবন্ধু মঞ্চে ডেটা এন্ট্রির প্রশিক্ষণ ছিল। সেই প্রশিক্ষণ শিবির চলাকালীনই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন কর্তব্যরত বিএলওরা। স্লোগান দিতে দিতে শিবির ছেড়ে বেরিয়ে আসেন তাঁরা। বিএলওদের অভিযোগ, আচমকাই নির্বাচন কমিশন থেকে তাঁদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ডিজিটালে ডেটা এন্ট্রি করতে হবে। আর এজন্য দ্রুত প্রশিক্ষন নিতে হবে। আর তাতেই আপত্তি জানান বিএলওরা। অভিযোগ, বিভিন্নভাবে কাজের চাপ দেওয়া হচ্ছে। এমনকী গভীর রাতে কমিশন থেকে ফোন করে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। এতে স্বাভাবিক জীবন ব্যহত হচ্ছে বলে দাবি বিএলওদের।
শুধু শিলিগুড়িতে নয়, ডেটা এন্ট্রির প্রশিক্ষন দেওয়ার জন্যই হাওড়ার শিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ১৭২ নম্বর বিধানসভার ২৪০ জন বিএলও-র শুক্রবার প্রশিক্ষন ছিলো টিকিয়াপাড়ার ওই সরকারি দপ্তরে। আর ওখানে ওই প্রশিক্ষন নিতে গিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন বিএলও-রা। তাঁরা দাবি করেন, এত দ্রুত এই প্রশিক্ষন নেওয়া সম্ভব নয়। একবার হাতে লিখে, একবার ডিজিটালে ডেটা এন্ট্রি করার মতো এত চাপ তাঁরা নিতে পারবেন না। তাছাড়া অনেক বয়স্ক বিএলও রয়েছেন যাঁরা এত প্রযুক্তি জানেন না। তাঁরা এই কাজ করতে সমস্যায় পড়ছেন। পাশাপাশি প্রচুর ফর্ম দিয়ে তাঁদের দ্রুত সেই ফর্ম নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে বলা হচ্ছে। দ্রুত কাজ শেষ করতে রোজ নতুন নতুন নির্দেশ দিয়ে রাত পর্যন্ত তাঁদের কাজের চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে এদিন বিক্ষোভ দেখান বিএলও-রা।
সহেলি নস্কর নামে বিক্ষোভকারী এক শিক্ষিকা বিএলও বললেন, ‘‘আমাদের একদিকে স্কুলে গিয়ে ক্লাসও নিতে হচ্ছে আবার দ্রুত নির্বাচন কমিশনের কাজও শেষ করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। আমরা এত চাপ নিতে পারছি না। এর পর ডিজিটালে ডেটা এন্ট্রি করার জন্য চাপ দিয়ে প্রশিক্ষন দেওয়া হচ্ছে। আমরা এত চাপ নিয়ে ডিজিটাল ডেটা এন্ট্রি করবো না। আমরা এই কাজ বয়কট করছি।’’ আরেক বিক্ষোভকারী বিএলও শিক্ষক প্রকাশ মাজি বললেন, ‘‘২০০টা করে ফর্ম ম্যানুয়ালি ও ডিজিটালি পূরণ করতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। আমরা এত চাপ নিতে পারবো না। প্রয়োজনে আমরা জেলাশাসককে এ ব্যাপারে ডেপুটেশন দেবো।’’ একের পর এক জায়গায় বিএলওদের বিক্ষোভে রীতিমতো অস্বস্তিতে নির্বাচন কমিশন।