নব্যেন্দু হাজরা: ‘কলকাতা, তুমিও হেঁটে দেখো কলকাতা! তুমিও ভেবে দেখো কলকাতা! যাবে কিনা যাবে আমার সাথে!’ প্রাক্তন সিনেমার এই গানের দৃশ্য কলকাতাকে যেন নতুন করে চিনতে শিখিয়েছিল। আমাদের শহরের চারপাশে কত কীই-না আছে, কিন্তু কতটুকুই বা আমরা জানি! কেই-বা আমাদের চিনতে, জানতে শেখায় সেখানকার ইতিহাস!
এবার শীতের মরশুম শুরুর মুখেই পরিবহণ দপ্তরের উদ্যোগে শুরু হতে চলেছে ‘কলকাতা দর্শন’। ডিসেম্বরের গোড়াতেই শহর এবং শহরতলির দ্রষ্টব্য স্থানগুলোকে পর্যটকদের ঘুরিয়ে দেখানো হবে। সঙ্গে থাকবে গাইড। এসি বাসে করে তিনি শহর ঘোরাবেন দেশি-বিদেশি পর্যটকদের। মূলত শনি ও রবিবার এবং যে কোনও সরকারি ছুটির দিনগুলোয় এই প্যাকেজ টুর করানো হবে এসি ভলভো বাসে।
পরিবহণ দপ্তরসূত্রে খবর, দু’রকমভাবে টিকিট হবে সেখানে। এই দ্রষ্টব্যস্থানে ঢোকার টিকিট-সহ বাসের ভাড়া। আর য়াঁরা সব জায়গায় ঢুকে দেখবেন না, তাঁদের জন্য শুধু ঘোরার বাসভাড়া। বাসেই থাকছে ব্রেকফাস্ট থেকে রিফ্রেশমেন্টের ব্যবস্থাও। তবে এখনও তার ভাড়া ঠিক হয়নি। জানা গিয়েছে, তিন ভাবে এই প্যাকেজের টিকিট কাটার ব্যবস্থা করা হবে। আপাতত ঠিক হয়েছে, এসপ্ল্যানেডে পরিবহণ নিগমের মূল টিকিট কাউন্টার থেকে, পরিবহণ দপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে যাত্রীরা টিকিট কাটতে পারবেন। তবে যাত্রীসাথী অ্যাপের মাধ্যমেও যাতে টিকিট কাটা যায়, সে বিষয়টি নিয়েও আলোচনা চলছে। দপ্তরের এক আধিকারিকের কথায়, সবই প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। তবে বেশকিছু দ্রষ্টব্য স্থানে ঢোকার ক্ষেত্রে টিকিট এখনও অনলাইনে বুক করা যায় না। ফলে সেখানকার টিকিট কীভাবে কাটা হবে, সে বিষয়টি নিয়েই আলোচনা চলছে।
পরিবহণ দপ্তরের এক আধিকারিকের কথায়, শীত পড়তেই পর্যটকরা বেড়াতে যান এদিক-সেদিক। তবে এই কলকাতার মধ্যেই যে আরেকটা কলকাতা লুকিয়ে আছে, যা সেভাবে দেখা হয় না সাধারণ মানুষের, তা-ই এবার দেখাবে পরিবহণ দপ্তর। সকাল থেকেই শুরু হবে টুর। তা ছাড়া এই সময় প্রচুর বিদেশিও আসেন কলকাতা ঘুরতে। তাঁদের কথা মাথায় রেখেও এই পরিকল্পনা। এক আধিকারিকের কথায়, বহু মানুষই শীতের মিঠে রোদ গায়ে মেখে বেড়াতে বেরোন। কিন্তু একই দিনে একাধিক জায়গা তাঁদের ঘোরা হয় না, সেটা যাতে হয়, তাই এই প্যাকেজ। প্রতিবছর পরিবহণ দপ্তরের উদ্যোগে পুজো পরিক্রমাও মানুষের মন জয় করে নেয়। আর এই শীতের এই শহর পরিক্রমাও মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।