• ‘তেজস্বী ঘরছাড়া করেছেন’, রোহিণীর বিস্ফোরক বয়ানে চরমে লালুপরিবারের ‘গৃহযুদ্ধ’
    প্রতিদিন | ১৬ নভেম্বর ২০২৫
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দল ও পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পর এবার বিস্ফোরক লালুপ্রসাদ যাদবের কন্যা রোহিণী আচার্য। শনিবার রাবড়ি দেবীর বাড়ি থেকে বেরোনোর পর পটনা বিমানবন্দরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে অভিযোগ করলেন, ভাই তেজস্বী যাদব তাঁকে বাড়ি ছাড়া করেছেন। শুধু তাই নয়, লালুকন্যার আরও দাবি, আমার কোনও পরিবার নেই। ফলে কোনও দায়িত্বও নেই। এমনকী আরজেডির অন্দরে চরম অরাজকতার অভিযোগ তোলেন রোহিণী।

    যা চলছে তার জন্য রামিজ ও ভাই তেজস্বী যাদবের ঘনিষ্ঠ সহযোগী সঞ্জয় যাদবের বিরুদ্ধে সরব হয়ে রোহিণী বলেন, তাঁকে তাঁর পরিবার থেকে কার্যত তাড়ানো হয়েছে। এই কাজ করেছেন সঞ্জয়, রামিজ ও তাঁর ভাই তেজস্বী। সঞ্জয়কে আরজেডির ‘চাণক্য’ বলে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “যিনি চাণক্য সাজবেন, এই ব্যর্থতার পর তাঁকে তো জবাব দিতে হবে। তবে সঞ্জয় যাদব বা রমিজের কাছে প্রশ্ন তোলার অর্থ ভয়ংকর পরিস্থিতিকে আমন্ত্রণ জানানো। প্রশ্ন করলেই দল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়, অপমান, গালিগালাজ এমনকী চটি দিয়ে পেটানোর হুমকি দেওয়া হয়। দলের মধ্যে চরম অস্বচ্ছতা ও ভয়ের পরিবেশ রয়েছে বলে অভিযোগ করেন লালুকন্যা। 

    কয়েকমাস আগেই নিজের বড় ছেলে তেজপ্রতাপ যাদবকে রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) থেকে বহিষ্কার করেন লালু। এবার দল ছাড়লেন তাঁর কন্যাও। নিজের দলত্যাগ প্রসঙ্গে সোশাল মিডিয়ায় রোহিণী জানান, তিনি গোটা ঘটনার দায় চাপাচ্ছেন রামিজ ও ভাই তেজস্বী যাদবের ঘনিষ্ঠ সহযোগী সঞ্জয় যাদবের উপরে। তিনি লিখেছেন, ‘আমি রাজনীতি ছাড়ছি। এবং পরিবারও। সঞ্জয় যাদব ও রামিজ আমাকে এমনটাই করতে বলেছেন। সমস্ত দায় আমি নিচ্ছি।’

    ২০২২ সালের ডিসেম্বরে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে লালুর কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়। বাবাকে কিডনি দিয়েছিলেন রোহিণীই। এমনটাই জানা যায়। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে যাদব পরিবারের চতুর্থ সন্তান হিসেবে রাজনৈতিক কেরিয়ার শুরু করেন রোহিণী। যদিও সেই সূচনা সুখকর হয়নি। বিহারের সারন লোকসভা কেন্দ্র থেকে আরজেডির টিকিটে ভোটে দাঁড়ালেও হারতে হয়েছিল। এবার রাজনীতিকেই ‘টা টা’ করলেন লালুকন্যা।

    তবে রোহিণীর এমন সিদ্ধান্ত আকস্মিক নয় বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। বিশেষজ্ঞদের মতে, ফাটল অনেকদিন আগেই ধরে গিয়েছিল। কয়েক মাস আগে থেকেই রোহিণীর সঙ্গে দল এবং পরিবারের ফাটল ইতিমধ্যেই চওড়া হয়েছিল। নিজের বাবা, ভাই তেজস্বী যাদব-সহ দলের এক্স হ্যান্ডলকে ‘আনফলো’ করে দেন লালুকন্যা। পাশাপাশি, পরিবারের দিকে ছুড়েছিলেন কটাক্ষও।

    এদিকে তিনি বাবাকে কিডনি আদৌ দিয়েছিলেন কিনা তা নিয়েও বিতর্ক বাঁধে। যে প্রসঙ্গে ক্ষুদ্ধ রোহিণীকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “যাঁরা প্রমাণ ছাড়াই এই ধরনের অভিযোগ আনছেন, তাঁদের প্রকাশ্যে তাঁর কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। ক্ষমা চাওয়া উচিত প্রত্যেক মা-বোন-কন্যার কাছেও। মহিলাদের বিরুদ্ধে এধরনের মানহানিকর বা মিথ্যা অভিযোগ ছড়ানো কাম্য নয়।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)