‘বিনা দোষে’ ৩০ দিন জেলবন্দি ব্যক্তি! ভুয়ো মামলায় পুলিশকে ভর্ৎসনা হাই কোর্টের
প্রতিদিন | ১৬ নভেম্বর ২০২৫
গোবিন্দ রায়: ভুয়ো মামলায় আদালতের তোপের মুখে পুলিশ। মুর্শিদাবাদের সুতি থানার তদন্তকারী অফিসারকে তীব্র ভর্ৎসনা করলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ। শুধু তাই নয়, থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক (OC) ভূমিকাতেও বেজায় অসন্তুষ্ট বিচারপতি। বিনা দোষে এক ব্যক্তিকে ৩০ দিন জেলে রাখায় অভিযোগে তদন্তকারী অফিসারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশও দেয় হাই কোর্ট। সাতদিনের মধ্যে জরিমানার টাকা হাই কোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে জমা দিতে হবে৷
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১৩ এপ্রিল নাসির নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে সুতি থানার পুলিশ। ২৬ জুলাই নিম্ন আদালত তাঁর জামিন মঞ্জুর করে। কিন্তু তার আগেই ১৭ জুলাই তাঁর বিরুদ্ধে অন্য একটি মামলায় ফের হেফাজতে নেয় সুতি থানা। অভিযুক্ত জেল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করে জানান, যে মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেই মামলার সঙ্গে তাঁর কোনও যোগ নেই। এফআইআর, চার্জশিটেও তাঁর নাম নেই। এমনকী তাঁর নামে কোনও অভিযোগই পুলিশের কাছে জমা পড়েনি। তারপরও বিনা কারণে তাঁকে জেলে থাকতে হয়েছে। জেল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি৷ অবশেষে জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর ন্যায় বিচারের দাবিতে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন নাসির। তাতেই হাই কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় সুতি থানার পুলিশকে।
আদালতে মামলাকারী জানান, পুলিশের কাজ মানুষকে রক্ষা করা। মানুষের সম্পত্তি সুরক্ষিত করা। কিন্তু, এই ক্ষেত্রে পুলিশ শুধু নিজের দায়িত্ব পালনে শুধু ব্যর্থই হয়নি, তাদের গাফিলতির কারণে ৩০ দিন এক ব্যক্তিকে কোনও দোষ না করেই কারাবাসে থাকতে হয়েছে। আদালতের কাছে মামলাকারী আর্জি ছিল, পুলিশের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হোক। শুনানির সময় মামলাকারীর সেই আর্জিতেই সায় দেন বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ। আদালতে রাজ্যের আইনজীবী জানান, অপরাধ নথিভুক্ত করার সময় লিখতে ভুল করে ফেলেছিলেন সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্মী। তার কারণেই নাসিরকে গ্রেপ্তার করে জেলে রাখা হয়েছিল। রাজ্য পুলিশের এই বক্তব্যে স্তম্ভিত হয়ে যান বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ। আদালতের পর্যবেক্ষণ, “এটা কোনওভাবেই ছোট ভুল বলে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।”