তিন ‘বিদ্রোহী’র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, দুর্নীতির অভিযোগ তোলায় প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আর কে সিংকে বহিষ্কার করল বিজেপি
বর্তমান | ১৬ নভেম্বর ২০২৫
পাটনা: ডাবল ইঞ্জিন বিহারে ডাবল সেঞ্চুরি পার। এনডিএ-র বিশাল জয়ের পরের দিনই দলের ‘বিদ্রোহী’দের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিল বিজেপি। দলবিরোধী কাজের অভিযোগে তিন নেতানেত্রীকে সাসপেন্ড করা হল। কেন বহিষ্কার করা হবে না, তার জবাব চেয়ে শো-কজ চিঠি দিল। সেই চিঠির পরই শনিবার দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিলেন বিহার বিজেপির প্রবীণ নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আর কে সিং। বিহারে ৬২ হাজার কোটির বিদ্যুৎ দুর্নীতির অভিযোগে সুর চড়িয়েছিলেন তিনি। সূত্রের খবর, বেসুরো তিন নেতানেত্রীকে শো-কজ নোটিশ পাঠানোটা নিয়মরক্ষা মাত্র। তাঁদের বহিষ্কার হওয়াটা ছিল শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। তা বুঝেই শো-কজের জবাব না পাঠিয়ে সরাসরি ইস্তফাপত্রই পাঠালেন সিং। তাঁর ইস্তফাপত্র আসার পর বিজেপি নেতৃত্বও জানিয়ে দিল, সিংকে ছ’বছরের জন্য পার্টি থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে। প্রাক্তন এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পাশাপাশি আর যে দু’জনকে সাসপেন্ড করেছে বিজেপি, তাঁরা হলেন বিধান পরিষদের সদস্য অশোক আগরওয়াল ও কাটিহারের মেয়র ঊষা আগরওয়াল।
ভোটের ফলে বিপুল জয় নিশ্চিত হতেই শনিবার সকালে তিন বিদ্রোহী নেতানেত্রীকে শো-কজের চিঠি পাঠান বিহার বিজেপির রাজ্য সদরদপ্তরের ইন-চার্জ অরবিন্দ শর্মা। তিন নেতানেত্রীকে পৃথকভাবে পাঠানো সেই চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘আপনি দল বিরোধী কাজে জড়িয়েছেন। এটি দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের বিষয়। আপনার কাজকর্মে দলের ক্ষতি হয়েছে। তাই নির্দেশমাফিক আপনাকে সাসপেন্ড করা হচ্ছে। কেন বহিষ্কার করা হবে না, দলের পক্ষ থেকে তার ব্যাখ্যা চাওয়া হচ্ছে। তাই চিঠি পাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করুন।’
আর কে সিং আরা লোকসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন সাংসদ। ২০২৪ সালের ভোটে হারার পর থেকেই দলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন তিনি। বিহারের এনডিএ নেতৃত্ব ও কিছু শরিক নেতার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। বিশেষ করে আর কে সিংয়ের নিশানায় ছিলেন প্রবীণ বিজেপি নেতা তথা উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী এবং দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ জয়সওয়াল। এই দুই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে প্রশান্ত কিশোর দুর্নীতির অভিযোগ তোলায় এবিষয়ে তাঁদের ব্যাখ্যা দেওয়া উচিত বলে সুর চড়িয়েছিলেন সিং। শুধু তাই নয়, বিহারে ৬২ হাজার কোটি টাকার বিদ্যুৎ দুর্নীতিরও অভিযোগ তোলেন তিনি। পাশাপাশি সিংয়ের অভিযোগ ছিল, বিহারে আদর্শ আচরণবিধি বাস্তবায়িত করতে ব্যর্থ হয়েছে নির্বাচন কমিশন। দলবিরোধী কাজের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে বিধান পরিষদের সদস্য অশোক আগরওয়ালকেও। তাঁর ছেলে সৌরভ ভিআইপি প্রার্থী হিসেবে এবার বিজেপির বিরুদ্ধে ভোটে লড়াই করেছিলেন। ছেলের হয়ে বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রচারও করেছিলেন অশোক। দলবিরোধী কাজের অভিযোগেই সাসপেন্ড করা হয়েছে কাটিহারের মেয়র ঊষা আগরওয়ালকেও।