আটক আরও ৩ ডাক্তার, ফের নাশকতার প্রস্তুতি মেডিকেল মডিউলের?
বর্তমান | ১৬ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: হরিয়ানায় প্ল্যান। দিল্লিতে আচমকা বিস্ফোরণ। ব্লু-প্রিন্ট তৈরি হয়েছে আফগানিস্তান ও তুরস্কের হ্যান্ডলারের সঙ্গে বসে। নেটওয়ার্ক কাশ্মীর থেকে কানপুরজুড়ে। মিশন একটাই—‘ব্লাস্ট’! আর এই প্ল্যানে সিংহভাগ অংশগ্রহণকারী ডাক্তার। এপিসেন্টার ফরিদাবাদের আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়। মেডিকেল মডিউলের জাল কতদূর বিস্তৃত, সেটা নিয়ে দিল্লি পুলিশ ও এনআইএ নিজেরাও বিস্মিত। কারণ, একটির পর একটি সূত্র উন্মোচিত হচ্ছে এবং দেখা যাচ্ছে আরও একঝাঁক ডাক্তার জড়িত এই চক্রে। ক্রমেই রাজ্য থেকে রাজ্যে ছড়াচ্ছে তদন্তের পরিধি। তালিকায় নতুন সংযোজন পাঞ্জাব।
শুক্রবার মধ্যরাতে পাঠানকোটে হোয়াইট মেডিকেল কলেজের ৪৫ বছর বয়সি এক সার্জনকে আটক করা হয়েছে। মূলত কাশ্মীরের বাসিন্দা। দিল্লি বিস্ফোরণে যে আত্মঘাতী সন্দেহভাজনের মৃত্যু হয়েছে, সেই ডাঃ উমর উন নবির ঘনিষ্ঠ এই চিকিৎসকের নাম রইস আহমেদ ভাট। ২০২০ সাল থেকে এক বছরের জন্য সে কাজ করেছে আল-ফালাহ হাসপাতালে। হরিয়ানার নুহ এবং ধৌজ থেকে আটক করা হয়েছে আরও দুই চিকিৎসককে, ডাঃ মুস্তাকিম এবং ডাঃ মহম্মদ। কয়েকদিন আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল ডাঃ রিহানকে। পুলিশের জালে ইতিমধ্যেই ধরা পড়েছে ডাঃ মুজাম্মিল শাকিল গনি, ডাঃ শাহিন শাহিদ এবং ডাঃ আদিল। টেলিগ্রাম অ্যাপের পাশাপাশি সুইৎজারল্যান্ডের একটি এনক্রিপটেড অ্যাপ ডাউনলোড করা রয়েছে ধৃতদের স্মার্টফোনে। তদন্তকারীদের আপাতত প্রধান উদ্বেগ হল, এই মডিউলের কারা এখনও জেরা ও সন্দেহের আওতার বাইরে? তারা কোথায়? এখনও যে বহু বিস্ফোরক বাইরে রয়েছে, সেটা নিয়ে সংশয় নেই। এই বাইরে থাকা মেডিকেল মডিউল কি সতীর্থদের গ্রেফতার হওয়ার প্রতিশোধ নিতে আবার কোনও হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে না তো?
গত ৮ থেকে ১০ নভেম্বর, এই ৪৮ ঘণ্টায় আই-২০ গাড়ি চালিয়ে ঘুরেছে ডাঃ উমর নবি। কোথায় গিয়েছিল সে? উত্তর হল, হরিয়ানার নুহ, ধৌজ, দিল্লির তুর্কমান গেটের কাছে এক মসজিদ, ইন্ডিয়া গেট, ময়ূর বিহার, দিল্লি মুম্বই এক্সপ্রেসওয়ে। প্রতিটি স্থানে কেন একাধিকবার করে গিয়েছিল সে? তদন্তকারীদের একটি সূত্র জানিয়েছে, বিস্ফোরক পৃথক পৃথক লোকেশনে মজুত করাই ছিল লক্ষ্য। কার থেকে কেনা হয়েছিল ৩ লক্ষ টাকা দিয়ে এনপিকে সার? উত্তর খুঁজতে গোয়েন্দারা সূত্র ধরে এগিয়ে সন্ধান পেয়েছে দীনেশ ওরফে ডাব্বুর। বিনা লাইসেন্সের সার সাপ্লায়ার। উমরের পরিচিত। একদিকে উমর যখন সার ও বিস্ফোরক উপকরণ সংরক্ষণের জন্য পৃথক স্থান নির্বাচন করে চলেছে, তখন লখনউয়ের বাসিন্দা আল-ফালাহয় কর্মরত ডাঃ শাহিন আবেদন করেছে পাসপোর্টের। হরিয়ানা পুলিশের কাছে দরবারও করেছে, যাতে দ্রুত পুলিশ ভেরিফিকেশন হয়। গত ৩ নভেম্বর তার পুলিশ ভেরিফিকেশন হয়েছে আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস হস্টেলের ৩ নম্বর রুমে।
আল-ফালাহ হাসপাতালের সঙ্গে কোনও না কোনও ভাবে যুক্ত মেডিকেল পড়ুয়া, চিকিৎসকদের একাংশের মধ্যে একটি বিশেষ সাদৃশ্য রয়েছে। তাদের অনেকের কাছেই চীনের এমবিবিএস ডিগ্রি। ভারত, তুরস্ক,আফগানিস্তান, সিরিয়ার সংযোগ পাওয়া গিয়েছে। এবার কি চীন?