• জলপাইগুড়িতে পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে ভয়াবহ সংঘর্ষ, তিস্তা ব্রিজ থেকে ছিটকে নদীতে পড়লেন বাইক আরোহী, মৃত ৩
    বর্তমান | ১৬ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: রাতের অন্ধকারে জলপাইগুড়ির তিস্তা সেতুতে পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে বাইকের ভয়াবহ সংঘর্ষ। দুর্ঘটনার জেরে তিস্তা সেতু থেকে ছিটকে নদীতে গিয়ে পড়লেন এক বাইক আরোহী। দুর্ঘটনায় মোট তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে একজনের বাড়ি জলপাইগুড়ি শহরের সেনপাড়ায়, বাকি দু’জন পাশেই খড়িয়া পঞ্চায়েতের সুকান্তনগর কলোনির বাসিন্দা। 

    স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে পিকনিকে খাওয়াদাওয়া করে একই বাইকে তিনজন জলপাইগুড়ি থেকে ময়নাগুড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। উল্টো লেন ধরে যাচ্ছিলেন তাঁরা। পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় বাইকটির। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গুরুতর জখম দু’জনকে উদ্ধার করে জলপাইগুড়ি মেডিকেলের অধীন সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে আসে। কর্তব্যরত চিকিৎসক সেখানে তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। শুক্রবার রাতে অবশ্য জানা যায়নি যে, ওই বাইকে আরও একজন ছিলেন। শনিবার সকালে মৎস্যজীবীরা তিস্তায় মাছ ধরতে যাওয়ার সময় নদীতে তৃতীয় যুবকের দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। 

    মনে করা হচ্ছে, পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে বাইকটির এতটাই জোরে সংঘর্ষ হয় যে, অভিষেক বর্মন ওরফে বাপ্পা (৩০) নামে ওই যুবক ছিটকে তিস্তা সেতু থেকে নীচে নদীতে পড়ে যান। পুলিশ সূত্রে খবর, দুর্ঘটনার জেরে শুক্রবার রাতেই মৃত্যু হয় গোবিন্দ রাম (২৯) ও চঞ্চল দাসের (৩১)। পুলিশ দুর্ঘটনাগ্রস্ত পিকআপ ভ্যান ও বাইকটি বাজেয়াপ্ত করেছে। জলপাইগুড়ি সদরের ট্রাফিক আইসি অমিতাভ দাস বলেন, ‘বাইকটি উল্টো লেন ধরে ময়নাগুড়ির দিকে যাচ্ছিল। তিস্তা ব্রিজে একটি পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে বাইকটির সজোরে ধাক্কা লাগে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গুরুতর জখম অবস্থায় দুই বাইক আরোহীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানেই চিকিৎসকরা তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। এদিন সকালে দুর্ঘটনাস্থলের কাছে নদী থেকে আরও এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয়েছে। ওই যুবক একই বাইকে ছিলেন কি না তা খতিয়ে দেখছি আমরা।’

    এদিন সকালে জলপাইগুড়ি মেডিকেলের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে দাঁড়িয়ে মৃত অভিষেক বর্মনের মামা মানিক বর্মন বলেন, ‘যতটুকু জানতে পেরেছি, শুক্রবার রাতে পিকনিকে খাওয়াদাওয়া করে ভাগ্নে সহ ওর বন্ধুরা বাইকে ময়নাগুড়ির দিকে যাচ্ছিল। তখনই দুর্ঘটনাটি ঘটে।’ তাঁর দাবি, ‘শুক্রবার বেশি রাতে আমরা তিস্তা ব্রিজে দুর্ঘটনার খবর পাই। এরপরই ভাগ্নেকে ফোন করি। মোবাইল সুইচ অফ বলছিল। এদিন সকালে শুনতে পাই, তিস্তা সেতুর নীচে এক যুবকের দেহ পাওয়া গিয়েছে। এই খবর পেয়েই হাসপাতালে আসি। দেখি, দেহটি ভাগ্নের।’ মৃত অভিষেক অনলাইন সংস্থায় ডেলিভারি বয়ের কাজ করতেন বলে পরিবার সূত্রে খবর। মৃত অপর দু’জনের মধ্যে একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি ছিলেন। অন্যজনের জুতোর দোকান ছিল। এদিন জলপাইগুড়ি মেডিকেলের মর্গে গিয়ে মৃতদের পরিজনদের সান্ত্বনা দেন পুরসভার নয়া চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায়। • দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাইক। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)