জীবিত রোকেয়ার নাম বাদ গিয়েছে ভোটার তালিকায়, প্রতিবেশী মৃত রোকিয়ার নামে ইনিউমারেশন ফর্ম
বর্তমান | ১৬ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: নাম বিভ্রাটে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ৬৫বছরের রোকেয়া বেগমের নাম। আর, এক বছর আগে মারা যাওয়া তাঁরই প্রতিবেশী রোকিয়া বিবির নাম ভোটার তালিকায় জ্বলজ্বল করছে। শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের খারুই-১ পঞ্চায়েতের ৪৩নম্বর খারুই বুথের ঘটনা। দু’জনের বাড়ি পাশাপাশি। ভোটার তালিকায় তাঁদের ক্রমিক নম্বরও কাছাকাছি। নাম বিভ্রাটেই আগেকার বিএলওর ভুলে ভোটার তালিকায় জীবিতকে মৃত এবং মৃতকে জীবিত করে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রায় পাঁচ মাস আগে নাম বাদ পড়েছে। বাড়ি বাড়ি ইনিউমারেশন ফর্ম বিতরণের সময়ই নির্বাচন কমিশনের ওই ত্রুটি সামনে এসেছে।
মৃত রোকিয়া বিবির ইউনিমারেশন ফর্ম নিয়ে রোকেয়ার বাড়িতে হাজির হন বিএলও সোনারানি জানা দত্ত। রোকেয়ার পুত্রবধূ সই করে ফর্ম সংগ্রহ করার পরই দেখা যায়, প্রতিবেশী মারা যাওয়া বৃদ্ধার ফর্ম বিএলও বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন। এরপর সেই ফর্ম বিএলওকে ফেরত দেওয়া হয়। বুথ লেভেল অফিসার বিষয়টি অ্যাসিস্ট্যান্ট ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার(এইআরও) অলোককুমার মান্নার নজরে এনেছেন। ব্লক প্রশাসন ওই ঘটনা জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছে। খারুই গ্রামে হামেদ মল্লিক ও মইবুল একে অপরের প্রতিবেশী। হামেদের স্ত্রী ৮১বছরের রোকিয়া বিবি এক বছর আগে মারা গিয়েছেন। মারা যাওয়ার পর তাঁর ডেথ সার্টিফিকেটের কপি পঞ্চায়েতে জমা পড়েছে। সেই কপি বিএলওর কাছে পৌঁছয়। হামেদ মল্লিকের প্রতিবেশী মইবুলের স্ত্রীর নাম রোকেয়া বেগম। ৬৫বছরের রোকেয়া সুস্থ আছেন। বাড়িতে ভোটার কার্ড, আধার সব আছে। আগের ভোটার তালিকায় মৃত রোকিয়ার ক্রমিক নম্বর ৮৫২। অপরদিকে, লিস্টে রোকেয়ার ক্রমিক নম্বর ৮৫৮। সদ্য প্রকাশিত তালিকায় জীবিত রোকেয়ার নাম নেই। তাঁর নামে ইউনিউমারেশন ফর্মও আসেনি। যদিও ওই তালিকায় মারা যাওয়া রোকিয়া বিবির নাম আছে। তাঁর নামে ইনিউমারেশন ফর্মও এসেছে।
৪৩নম্বর বুথের বিএলও সোনারানি জানা দত্ত পাঁচদিন আগে বাড়িবাড়ি ইনিউমারেশন ফর্ম বিতরণের সময় রোকেয়া বেগমের বাড়িতে হাজির হন। সেখানে প্রত্যেক সদস্যের ফর্ম তুলে দেন। তখনই দেখা যায়, রোকেয়া বেগমের জন্য যে ফর্ম দেওয়া হয়েছে তাতে প্রতিবেশী মৃত রোকিয়া বিবির ছবি। স্বামীর নামও হামেদ মল্লিক উল্লেখ আছে। তাহলে রোকেয়া বেগমের ফর্ম কোথায়? ভোটার তালিকা ঘেঁটে দেখা যায়, ওই তালিকায় নামই নেই। প্রতিবেশী রোকিয়া বিবির নাম বাদ দিতে গিয়ে জীবিত রোকেয়া বেগমের নাম বাদ পড়েছে বলেই অনুমান। রোকেয়া বলেন, আমার নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আমার নামে এসআইআর ফর্মও আসেনি। অথচ, প্রতিবেশী মৃত রোকিয়া বিবির ফর্ম আমার বাড়িতে পৌঁছেছে। সেটি দেখার পর বিএলওকে ফেরত দেওয়া হয়েছে। এধরনের ভুল কীভাবে হয় জানি না। ৬৫বছর বয়সে নাগরিক থাকতে পাব কি না সেটাই এখন দুশ্চিন্তার। এইআরও অলোককুমার মান্না বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। জেলা প্রশাসনের নজরে আনা হয়েছে।