সুযোগ বাড়ল পশ্চিমবঙ্গের পরীক্ষার্থীদের, বাংলা লেখা-পড়া-বলার ক্ষমতা যাচাই হবে ডব্লুবিসিএস-এর ইন্টারভিউতেই
বর্তমান | ১৬ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ডব্লুবিসিএস আধিকারিক পদের চাকরিপ্রার্থীদের বাংলা ভাষা জানার ক্ষেত্রে আরও বেশি কড়াকড়ি হতে চলেছে। তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছে রাজ্য পাবলিক সার্ভিস কমিশন। ২০২৪-এর ডব্লুবিসিএস পরীক্ষার জন্য সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে তারা। সেখানে প্রার্থীদের যোগ্যতামান হিসেবে স্নাতক ডিগ্রির পাশাপাশি বাংলা ভাষা লেখা, পড়া ও বলার ক্ষমতা থাকতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। একমাত্র নেপালি যাঁদের মাতৃভাষা, তাঁরা এক্ষেত্রে ছাড় পাবেন। অর্থ দপ্তরের ২০১৬ সালের একটি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী এই নিয়ম বলেও জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ওই বছরের ডব্লুবিসিএস পরীক্ষার জন্য যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়, তাতেও এই নিয়ম ছিল। কিন্তু এবার তার সঙ্গে বিজ্ঞপ্তিতে আরও কয়েকটি লাইন যুক্ত করা হয়েছে। পরিষ্কার বলে দেওয়া হয়েছে, যেসব পরীক্ষার্থীর মাতৃভাষা বাংলা বা নেপালি নয়, তাঁদের পার্সোনালিটি টেস্ট বা ইন্টারভিউয়ের সময়েই বাংলা কতটা জানেন, সেই পরীক্ষা নেওয়া হবে। সেখানে পারফরম্যান্স খারাপ হলে প্রার্থীপদ বাতিল হয়ে যাবে।
ডব্লুবিসিএসে প্রথমে স্ক্রিনিং পরীক্ষায় বসতে হয়। অবজেকটিভ এমসিকিউ ধরনের পরীক্ষায় ভাষা জ্ঞান যাচাই হয় না। ওই পরীক্ষায় সফল প্রার্থীরা মূল পরীক্ষায় বসার সুযোগ পান। সফল প্রার্থীদের পার্সোনালিটি টেস্ট নেওয়া হয়। মূল পরীক্ষায় আবশ্যিক পেপারগুলি মধ্যে ইংরেজির পাশাপাশি অন্য একটি ভাষার পরীক্ষা দিতে হয়। বাংলা, নেপালি, সাঁওতালি, হিন্দি, উর্দু থেকে যে কোনও একটি বেছে নিতে পারেন পরীক্ষার্থীরা। ঐচ্ছিক পেপারের তালিকায়ও বাংলা, নেপালি, সাঁওতালি ছাড়াও রয়েছে হিন্দি, উর্দু সহ আরও কয়েকটি ভাষা। অর্থাৎ বাংলা বা নেপালি ভাষার পরীক্ষা না দিয়েও কেউ ডব্লুবিসিএস-এর লিখিত পরীক্ষায় উতরে যেতে পারেন। কিন্তু চাকরি পেতে গেলে ইন্টারভিউতেই বাংলা ভাষা পড়া, লেখা ও বলার সক্ষমতা দেখাতে হবে। যাঁদের মাতৃভাষা বাংলা বা নেপালি নয়, তাঁদের ডব্লুবিসিএস চাকরি পাওয়ার জন্য বাংলা জানতেই হবে।
সূত্রের খবর, এই পরীক্ষায় বাংলা বা নেপালি লিখিত পরীক্ষায় বাধ্যতামূলক করার চিন্তাভবনা আগেও হয়েছিল। কিন্ত তা আর হয়নি। কয়েক মাস আগে ডাব্লুবিসিএস পরীক্ষার বিষয় নিয়ে রাজ্য সরকার যে নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করে, সেখানে লিখিত পরীক্ষার আবশ্যিক বিষয়ের তালিকায় বাংলা, নেপালি ছাড়া অন্যান্য ভাষাও রাখা হয়। কারণ হিন্দির মতো ভাষা বাদ গেলে রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা কিন্তু মাতৃভাষা বাংলা বা নেপালি নয়, এমন পরীক্ষার্থীরা সমস্যায় পড়তেন। রাজ্যের বাসিন্দা, অথচ মাতৃভাষা বাংলা নয়, এমন পরীক্ষার্থীরাও বাংলা বলা, লেখা ও পড়ার যোগ্যতা দেখাতে পারবেন বলে আশা করছে কমিশন। কিন্তু ভিনরাজ্যের অবাঙালি পরীক্ষার্থদের বাংলার ‘বেড়া’ পার করতে সমস্যা হবে। ফলে রাজ্যবাসীদের চাকরি পেতে সুবিধা হবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকারের অন্যান্য স্থায়ী চাকরিতে এই নিয়মই রয়েছে। কয়েক বছর আগে ক্লার্কশিপ পরীক্ষায় সফল হয়েও কয়েকজন বাতিল হয়েছিলেন বাংলা না জানার কারণে।