শর্তসাপেক্ষে মেয়াদ বাড়ছে পুরনো বাসের, খুশি বাসমালিক সংগঠন
আনন্দবাজার | ১৬ নভেম্বর ২০২৫
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশিকার ভিত্তিতে বৃহত্তর কলকাতা মহানগর এলাকায় ১৫ বছরের পুরনো বাসের পারমিটের নবীকরণবন্ধ করে দিয়েছিল পরিবহণ দফতর। সেই নিষেধাজ্ঞার কারণে বহু বাস বাতিল হতে বসেছিল। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ১৩ মাস আগে বাস বাতিল করার ক্ষেত্রে সেটির আয়ু নয়, স্বাস্থ্যকে মাপকাঠি হিসেবে ধরার দাবি জানিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় বেসরকারি বাসমালিকদের ছ’টি সংগঠন।
সম্প্রতি ওই মামলায় বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায় বাসের স্বাস্থ্য এবং দূষণ-মাত্রা খতিয়ে দেখে মেয়াদ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। হাই কোর্টের এই নির্দেশকেঐতিহাসিক জয় বলে দাবি করেছেন বেসরকারি বাসমালিক সংগঠনের নেতৃত্ব। আদালতের নির্দেশের ফলে প্রায় ১০০০ বাস কলকাতা শহর এলাকায় বাতিল হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পেল। এর ফলে বহু রুটথেকে হঠাৎ বাস উধাও হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সাময়িক ভাবে কমল বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, ওই সববাসকে বছরে দু’বার স্বাস্থ্য এবং দূষণ সংক্রান্ত পরীক্ষা দিতে হবে।সেই পরীক্ষায় দূষণ-মাত্রা নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থাকা ছাড়াও বাসের অন্যান্য যন্ত্রাংশ ঠিক থাকা জরুরি। তার ভিত্তিতেই বাস রাস্তায় চলাচলের ছাড়পত্র পাবে।
২০০৮ সালে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বৃহত্তর কলকাতা এলাকায় দূষণ কমাতে ১৫ বছর মেয়াদে নির্দিষ্ট নির্গমন-মাত্রার গাড়ি বাতিল করার কথা বলেছিল। সেখানে দূষণ-মাত্রার উল্লেখ ছিল না বলে খবর। বাসের প্রযুক্তি উন্নত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দূষণ-মাত্রা কমার বিষয়টিকে হাতিয়ার করেই বাসমালিক সংগঠনের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়। ওই দাবিকে নীতিগত সমর্থন জানানোর বার্তা নবান্ন ছাড়াও পরিবহণ দফতর থেকে দেওয়া হয়েছিল। পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী নিজেও বাসের মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে একাধিক বার সরব হয়েছেন।
তারই পরিপ্রেক্ষিতে পরিবহণ দফতরও এ নিয়ে পুরনো নির্দেশিকা সংশোধনের কথা আদালতের কাছে জানায়। ১৯৮৯ সালের কেন্দ্রীয় পরিবহণ আইনের সঙ্গে সংঘাত এড়িয়ে নির্দেশিকায় প্রয়োজনীয় বদল আনার কথা বলা হয়। শেষ পর্যন্ত সব পক্ষের সম্মতিতে বাসের মেয়াদ বৃদ্ধি সংক্রান্ত মামলায় সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাধান বার করা সম্ভব হল বলে জানিয়েছেন মামলাকারীদের প্রতিনিধি, সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা। অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় ওই নির্দেশকে ঐতিহাসিক বলে দাবি করেন। পাশাপাশি, রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে দু’জনেই রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। এই রায়ের ফলে বাসমালিকদের অনেকটা আর্থিক সুরাহা হবে বলেও তাঁরা জানান।