কেষ্টপুর–বাগজোলা খালের দূষণ নিয়ে কঠোর অবস্থান জাতীয় পরিবেশ আদালতের
আনন্দবাজার | ১৬ নভেম্বর ২০২৫
কেষ্টপুর ও বাগজোলা খালের ভয়াবহ দূষণ, দখলদারি এবং নিকাশির সমস্যায় ন’বছর ধরে কোনও উন্নতি নেই। তা নিয়ে ফের তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করল জাতীয় পরিবেশ আদালত। বার বার নির্দেশের পরেও পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন না হওয়ায় আদালতের পর্যবেক্ষণ, এই উদাসীনতা আর মেনে নেওয়া হবে না। গত ১২ নভেম্বরের শুনানিতে আদালত জানায়, পরের নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে দায়ী আধিকারিকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২০১৬ সালে আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কেষ্টপুর ও বাগজোলার দূষণের বিষয়টি খতিয়ে দেখে জানায়, খালে নির্বিচারে কঠিন বর্জ্য, নিকাশি ও শিল্পবর্জ্য ফেলা হচ্ছে, দু’ধারে চলেছে দখলদারি। যার জেরে আশপাশের বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য ও পরিবেশ— দুই-ই বিপর্যস্ত। ২০২২ সালে মামলার নিষ্পত্তির সময়ে আদালত সব পক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিল, বিস্তারিত পরিকল্পনা দিতে হবে। তাতে থাকবে কোথায়, কী কাজ হয়েছে, কোথায় বাকি, কোন প্রকল্প হাতে আছে, কত বাজেট বরাদ্দ, এবং কাজের সময়সীমা। ২০২৩ সালেও ফের সময় দেওয়া হয়। তবুও চলতি সপ্তাহের শুনানিতে আদালত জানায়, এখনও দূষণ কমানোর পদক্ষেপে অগ্রগতি শূন্য।
রাজ্য সরকার-সহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে বিস্তারিত হলফনামা জমা দিতে আদালত নির্দেশ দিয়েছে। কোথায় কত বর্জ্য সরানো হয়েছে বা হয়নি, কোথায় দখলদার আছে, কখন তাদের সরানো হবে, নিকাশি খালে ঢোকা রোধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, কোন প্রকল্প চলছে বা চলবে, তার বাজেট ও সময়সীমা— সব জানাতে হবে। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে আইন অনুযায়ী সময়সীমা বেঁধে নির্দেশিকা জারি করতেও বলা হয়েছে। নির্দেশ না মানলে দায়ী আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেছে আদালত। দূষণের উৎস বন্ধে এবং খালকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ করার উপরে বিশেষ জোর দিয়েছে আদালত।
আগামী ৯ মার্চ পরবর্তী শুনানির মধ্যেই সব হলফনামা আদালতে জমা দিতে হবে। মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্ত বলছেন, ‘‘ন’বছর ধরে চলা অবহেলা ও দেরিতে ক্ষুব্ধ আদালত এ বার যে কঠোর পথে হাঁটতে প্রস্তুত, তার বার্তাই উঠে এসেছে এই নির্দেশে।’’