খুনের মামলায় গ্রেফতার হয়েছে তৃণমূলের কোচবিহার ২ ব্লক সভাপতি সজল সরকার। কার্যত ফাঁকা মাঠে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তৃণমূলের আর এক নেতা শুভঙ্কর দে।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি শুভঙ্কর সজলের বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা বলে পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন। তিনি দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের ঘনিষ্ঠ। দল শুভঙ্করকে কোচবিহার ২ নম্বর ব্লকের পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেয়। তবে সজলের দাপটে ওই ব্লকে দলের কর্তৃত্ব পুরোপুরি নিজের হাতে নিতে পাচ্ছিলেন না শুভঙ্কর। দিন কয়েকের মধ্যে অবশ্য পুরোপুরি পাল্টে গিয়েছে ওই ব্লকের তৃণমূলের সাংগঠনিক চেহারা। শুভঙ্কর অবশ্য বলেন, 'দল যে দায়িত্ব দিয়েছে তা পালন করছি। দলের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। কিছু অঞ্চলে একাধিক অঞ্চল কমিটি নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। তা অঞ্চল নেতৃত্ব আলোচনার মধ্যে দিয়ে মিটিয়ে নিয়েছেন। দলের জেলা নেতৃত্ব যেভাবে আমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন আমরা সে ভাবে কাজ করছি।’’
সজলের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত কোচবিহার ২ নম্বর ব্লকের জেলা পরিষদ সদস্য পরিমল বর্মণ বলেন, ‘‘সজল সরকারের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভাল ছিল না। রাজ্য নেতৃত্ব তাকে ব্লক সভাপতি করায় একসঙ্গে কাজ করেছি। এ বারে যদি সর্বসম্মতিক্রমে নতুন ব্লক সভাপতি করা হয় কাজ করব। একনায়কতন্ত্র চালানো হলে কাজ করব না।’’
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার ২ নম্বর ব্লকে ভোটের অঙ্কে বেশ পিছিয়ে পড়ে তৃণমূল। যা নিয়ে দলের জেলা ব্লক সভাপতি সজল সরকারের ভূমিকা ভাল ভাবে নেননি জেলা নেতৃত্ব। ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকে ওই ব্লকে সজল কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। সেই সময় দলের পুরনো কর্মী শুভঙ্কর দেকে সামনে এনে দল পরিচালনা শুরু করেন জেলা নেতৃত্ব। জেলা নেতাদের একটি অংশ শুভঙ্করকেই এ বারে ব্লক সভাপতি চেয়েছিলেন। তবে এ বারে ব্লক সভাপতি রদবদলে দেখা যায় কোচবিহার ২ নম্বর ব্লকে সজলের উপরেই আস্থা রেখেছেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। তাতে অবশ্য দমে যাননি শুভঙ্কর। ওই ব্লকের কর্মীদের অনেকেই দাবি করেন, ওই ব্লকে সজল ও শুভঙ্কর সমান্তরাল ভাবে দল পরিচালনা করছিলেন। তাতে দলীয় কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি বাড়ছিল। সজল গ্রেফতার হওয়ায় শুভঙ্করের হাতে এখন সংগঠনের রাশ। দলের এক জেলা নেতার কথায়, ‘‘সজল যে মামলায় গ্রেফতার হয়েছে তাতে তার উপরে আর কেউই বিশ্বাস রাখবে না। দলও তার উপর ভরসা রাখবে না। তাই ওই ব্লকের দ্বন্দ্ব কার্যত মিটে গিয়েছে।’’