‘ভাল ছেলে, সকলকে সম্মান করত’! উত্তর দিনাজপুরে ধৃত আল-ফালাহে্র ডাক্তারি ছাত্রের গ্রেফতারিতে বিস্মিত পরিবার
আনন্দবাজার | ১৬ নভেম্বর ২০২৫
উত্তর দিনাজপুরের সূর্যাপুরে বোনের বাগ্দান এবং বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে এনআইয়ের হাতে ধরা পড়েন জাহান নিসার আলম। আল-ফালাহে্র ডাক্তারি ছাত্রের গ্রেফতারির ঘটনায় বিস্মিত তাঁর পরিবার। নিসারের কাকা আবুল কাসিম জানান, নিসার ওরফে জিগর খুবই ভদ্র স্বভাবের। বড়দের সম্মান করতেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এনআইয়ের হাতে বাড়ির সামনে থেকে আটক হওয়ার পরে নিজের মাকে ফোন করে বিষয়টি জানিয়েছিলেন নিসার। তাঁকে তদন্তকারীরা প্রথমে ইসলামপুরে নিয়ে যান। তার পরে নিসার জানিয়েছিলেন, তাঁকে শিলিগুড়ি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এনআইএ-র তরফে এখনও এই বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
দিল্লি বিস্ফোরণের পরে শিরোনামে হরিয়ানার ফরিদাবাদের আল-ফালাহ্ বিশ্ববিদ্যালয়। সেই বিশ্ববিদ্যালয়েই ডাক্তারি পড়ছেন নিসার। তুতো বোনের বিয়েতে উত্তর দিনাজপুরে এসেছিলেন তিনি। তাঁর জন্ম সেখানেই। নিসার যখন ছোট, তখনই তাঁর বাবা তৌহিদ আলম কাজের জন্য লুধিয়ানায় চলে যান। নিসারের কাকা কাসিম জানান, নিসার এবং তাঁর বোনের পড়াশোনা লুধিয়ানাতেই। সেখানে সকলের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক নিসারদের। তাঁর কথায়, ‘‘গত রবিবার চণ্ডীগড়ে নিসারের একটি পরীক্ষা ছিল। সেই পরীক্ষা দিয়ে বুধবার, ১২ তারিখ তিনি উত্তর দিনাজপুরে আসেন। তাঁর বড় কাকার মেয়ের বাগদান এবং বিয়ের অনুষ্ঠান রয়েছে।’’
কেন নিসারকে ধরেছে এনআইএ? তাঁর কাকা কাসিম বলেন, ‘‘আল-ফালাহ্ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি নির্দিষ্ট ব্যাচে যাঁরা পড়াশোনা করছেন, তাঁদের সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারীরা। তাঁরা নিসারের বাবার কাছে লুধিয়ানায় গিয়েছিলেন দু’দিন আগে। তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, ছেলে কোথায়। তিনি জানান, ছেলে বাড়ি গিয়েছে। তিনিও যাবেন বিয়েতে যোগ দিতে।’’ তার পরেই উত্তর দিনাজপুরে যান তদন্তকারীরা। কাসিম বলেন, ‘‘নিসার ভদ্র ছেলে। বাড়ি এলে সকলকে সম্মান করে। মেডিক্যাল কলেজের কিছু লোক জড়িয়ে গিয়েছে। তাই পাঠক্রমের শেষ ব্যাচের সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারীরা।’’
পুলিশের একটি সূত্র বলছে, নিশারের মোবাইলের লোকেশন দেখে তাঁকে ট্র্যাক করা সম্ভব হয়। তাঁর মোবাইল সিগন্যাল দেখায়, তিনি সূর্যাপুর বাজার সংলগ্ন এলাকায় রয়েছেন। সেই মতো এনআইএ দল সেখানে যায়। পরে তাঁকে আটক করে প্রথমে ইসলামপুরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং আরও জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে তাঁকে শিলিগুড়িতে স্থানান্তর করা হয় বলে পরিবার সূত্রে খবর। বিস্ফোরণকাণ্ডে ধৃত তিন চিকিৎসকের কোনও না-কোনও ভাবে যোগ রয়েছে হরিয়ানার ফরিদাবাদের আল-ফালাহ্ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে। এ বার সেখানকার ছাত্র নিসারকে এনআইএ হেফাজতে নেয় বলে খবর।