শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি হাটের দূষণ ও হাট বসা নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদলে করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আগেই আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়েছিল রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও বন দফতর। কিন্তু সেই হাট কে বা কারা বসতে অনুমতি দিয়েছিল সেই প্রশ্ন তুলে এবার রাজ্য সরকারের কাছে ফের একটি হলফনামা তলব করল জাতীয় পরিবেশ আদালত। একইসঙ্গে আদলত বন দফতরের কাছে জানতে চেয়েছে কত হোটেল বা রিসর্ট সেখানে গড়ে উঠেছে। যদিও এই বিষয়ে জেলা প্রশাসনের কেউই কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
আইন ভেঙে সোনাঝুরিতে হাট বসানো, যত্রতত্র আবর্জনা ফেলা, জঙ্গলের পরিবেশ নষ্ট করা, বেআইনি ভাবে জঙ্গলে একাধিক রিসর্ট তৈরির মতো নানা অভিযোগের ভিত্তিতে কয়েক মাস আগে জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা করেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। এরপরই এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও বন দফতরকে ভর্ৎসনা করে অ্যাকশন টেকন রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেয়। আদালতের নির্দেশমতো রাজ্য বন দফতর ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ হলফনামা জমা দেয়। কিন্তু তাতেও আদালত সন্তুষ্ট হয়নি। কয়েকদিন আগে বোলপুরে আয়োজিত শিল্প সম্মেলন থেকে শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি হাটের ‘ভবিষ্যৎ’ নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য শোনা যায় রাজ্যের মন্ত্রী চন্দনাথ সিংহের মুখে। হাট উঠে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মন্ত্রী। বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় চর্চাও।
শুক্রবার জাতীয় পরিবেশ আদালতে ফের মামলাটি উঠলে মামলাকারী আদালতের কাছে একটি তথ্য তুলে ধরেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে, বন দফতর আগের হলফনামায় আদালতকে জানিয়েছিল ২০২৪ সাল থেকে সোনাঝুরি হাট বসছে। কিন্তু মামলাকারী আদালতকে একটি তথ্য তুলে ধরে জানিয়েছেন ২০১৭ সাল থেকে হাট বসছে। এরপরই আদালত এই প্রসঙ্গে কার নির্দেশে হাট বসছে তা রাজ্য সরকারকে জানাতে চেয়ে হলফনামা তলব করে। একই সঙ্গে বন দফতর আগের হরফনামায় আদালতকে সোনাঝুরি হাট চত্বরে কতগুলি হোটেল-রিসর্ট গড়ে উঠেছে তাঁর সঠিক তথ্য তুলে ধরেনি বলে অভিযোগ করে। তাই সেই বিষয়েও আদালত বিস্তারিত ভাবে বন দফতরের কাছে জানতে চেয়েছে।
মামালাকারী সুভাষ দত্ত বলেন, “সোনাঝুরি জঙ্গলের সোনা ঝরে পড়েছে, তার কঙ্কালসার চেহারা বেরিয়ে এসেছে। এ বিষয়ে সকলের এগিয়ে আসা উচিত। পরিবেশ আদালত এ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে।” বোলপুরের রেঞ্জ অফিসার জ্যোতিষ বর্মন বলেন, “হাট কে বসতে দিয়েছে সে বিষয়ে আমাদের কাছে কোনও তথ্য নেই। বন দফতর হাট বসতে দেওয়ার বিষয়ে কোনও ভাবেই যুক্ত নয়। যখন থেকে আমাদের এটি নজরে এসেছে, আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি হাট অন্যত্র সরানোর।” তবে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের কারও কোনও প্রতিক্রিয়া এদিন মেলেনি।