• ‘ফর্মে ভুলভাল হলেই বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেবে’! এ বার ‘এসআইআর আতঙ্কে’ মৃত্যুর অভিযোগ দত্তপুকুরে
    আনন্দবাজার | ১৬ নভেম্বর ২০২৫
  • আবার ‘এসআইআরের আতঙ্কে’ মৃত্যু। এ বার উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরে। ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) ঘোষণার পর থেকেই আতঙ্কিত ছিলেন ওই সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ। পরিবারের দাবি, তাঁর চিন্তা ছিল এসআইআর ফর্মে কিছু ভুল হলেই বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সেই আতঙ্ক থেকে ব্রেনস্ট্রোকে আক্রান্ত হন তিনি। শনিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁর।

    দত্তপুকুর থানার পশ্চিম খিলগাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চাটুরিয়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন জিয়ার আলি। পরিবারের দাবি, এসআইআর নিয়ে প্রথম থেকেই চিন্তায় ছিলেন তিনি। আতঙ্কিত ছিলেন এসআইআরের ফর্ম ফিলআপ নিয়েও। তাঁর মনে হত, ফর্ম ভুল পূরণ হলেই তাঁকে বা তাঁর পরিবারকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

    ২০০২ সালের এসআইআরের তালিকায় নাম ছিল জিয়ারের। কিন্তু ছিল না এপিক নম্বর। তা দেখেই চিন্তিত হয়ে পড়েন তিনি, দাবি পরিবারের। পরে যখন তাঁর এসআইআর ফর্ম আসে তাতে এপিক নম্বর থাকায় আরও বেশি বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন জিয়ার। স্থানীয় সূত্রে খবর, গত বৃহস্পতিবার ব্রেনস্ট্রোকে আক্রান্ত হন তিনি। প্রথমে তাঁকে বারাসত মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় পাঠানো কলকাতায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হল তাঁর।

    মৃতের কন্যা মাসুদা বিবির দাবি, এসআইআর আতঙ্কেই মৃত্যু তাঁর বাবার। মাসুদার কথায়, ‘‘প্রত্যেক দিন ফোন করে বলত, যেন এসআইআরের ফর্ম ফিলআপে ভুল না-হয়। ভুল হলে ওরা বাংলাদেশে তাড়িয়ে দেবে।’’ জিয়ারের মৃত্যুর খবর পেয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ, মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান নিমাই ঘোষ, পঞ্চায়েত প্রধান হালিমা বিবি-সহ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। রথীনের দাবি, ‘‘এসআইআর ভীতি থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন জিয়ার। সেই থেকে মৃত্যু।’’

    গত ২৭ অক্টোবর রাজ্যে এসআইআর ঘোষণা হওয়ার পর থেকে সব মিলিয়ে ২০ জনের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। কেউ আত্মহত্যা করেছেন, আবার কোথাও ‘আতঙ্কে’ অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতরও শুরু হয়েছে। বিজেপির দাবি, রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল এসআইআর নিয়ে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। পাল্টা তৃণমূলের দাবি, সরকারি নির্দেশে কেউ নাগরিকত্ব হারাচ্ছেন না। কিন্তু সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে বিজেপিই।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)