চার মাস ধরে বন্দি! বাংলাদেশের জেলে মৃত্যু হল কাকদ্বীপের মৎস্যজীবীর, পরিবারের দাবি, ‘পরিকল্পিত হত্যা’
আনন্দবাজার | ১৬ নভেম্বর ২০২৫
আন্তর্জাতিক জলসীমান্ত লঙ্ঘনের অভিযোগে মাস চারেক আগে বাংলাদেশি নৌসেনার হাতে আটক হয়েছিলেন সুন্দরবনের এক মৎস্যজীবী। এ বার জেলেই মৃত্যু হল তাঁর। শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে মৃতের বাড়িতে সেই খবর এসে পৌঁছেছে। তার পর থেকে শোকে ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবার। তাঁদের দাবি, স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, বরং পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে ওই মৎস্যজীবীকে।
মৃত মৎস্যজীবীর নাম বাবুল দাস। হারউড পয়েন্ট কোস্টাল থানার অন্তর্গত রামকৃষ্ণ গ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম গঙ্গাধরপুর এলাকার বাসিন্দা ওই যুবক মূক ও বধির ছিলেন। গত জুলাই মাসে ‘এফবি মঙ্গলচণ্ডী-৩৮’ নামক একটি ট্রলারে করে মাছ ধরতে গিয়ে আন্তর্জাতিক জলসীমানা অতিক্রম করার অভিযোগে বাবুল-সহ ৩৪ জন ভারতীয় মৎস্যজীবী বাংলাদেশ নৌসেনার হাতে গ্রেফতার হন। সেই থেকে বাংলাদেশের জেলেই বন্দি ছিলেন তাঁরা। শনিবার হঠাৎ বাবুলের পরিবারের কাছে খবর আসে, জেলে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। খবর পাওয়ামাত্র কান্নায় ভেঙে পড়ে গোটা পরিবার। শোকের ছায়া নামে গোটা এলাকায়।
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সংসারের হাল ধরতে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতেন বাবুল। গত জুলাই মাসে ‘এফবি ঝড়’ এবং ‘এফবি মঙ্গলচণ্ডী ৩৮’ নামে দু’টি ট্রলারে চেপে কাকদ্বীপ থেকে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে বঙ্গোপসাগরের গভীরে পাড়ি দেন বাবুল-সহ বেশ কয়েক জন মৎস্যজীবী। কিন্তু ভুল করে তাঁরা বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে পড়েন। ১৫ জুলাই মংলা বন্দরের কাছে তাঁদের আটক করে বাংলাদেশের নৌবাহিনী। মামলা দায়ের হয় মংলা থানায়। বাগেরহাট আদালতে হাজির করানো হলে ধৃতদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই থেকে এত দিন সেখানেই ছিলেন বাবুল। মৃতের ভাই বাসুদেব দাসের কথায়, ‘‘দাদা মূক ও বধির হলেও অন্য কোনও রোগ ছিল না। বেশ সুস্থ সবল ছিল। আমাদের সন্দেহ, জেলে অত্যাচার করে ওকে মেরে ফেলা হয়েছে।’’ পরিবারের দাবি, পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে বাবুলকে। খবর পেয়ে শনিবার দুপুরে মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন সুন্দরবন শ্রমজীবী মৎস্য ইউনিয়নের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র। তিনি জানিয়েছেন, যত শীঘ্র সম্ভব বাবলুর দেহ কাকদ্বীপের বাড়িতে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে।