• চিকিৎসা ভিসায় এসে ভোটার কার্ডও
    আনন্দবাজার | ১৬ নভেম্বর ২০২৫
  • চিকিৎসা ভিসা নিয়ে বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন। তা তিনি করিয়েছিলেন। তবে তার সঙ্গে তৈরি করিয়েছিলেন এ দেশের ভোটার কার্ড, আধার কার্ড এমনকি, তার ভিত্তিতে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ায় (উত্তর ২৪ পরগনার হাবরায় হিজলপুকুর শাখা) অ্যাকাউন্টও। কার্যত এ দেশের বাসিন্দাই হয়ে উঠেছিলেন বাংলাদেশি নাগরিকত্ব এবং পাসপোর্টধারী ওই ব্যক্তি।

    এসআইআর চলাকালীন এই তথ্য দিয়ে ফের জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক করল বৈদেশিক আঞ্চলিক পঞ্জীকরণ শাখা (ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস বা এফআরআরও)। গত কয়েক দিনে তাদের হাতে ধরা পড়েছেন অন্তত ছ’জন বাংলাদেশি নাগরিক, যাঁদের কাছে পাওয়া গিয়েছে এ দেশের ভোটার-আধার কার্ড। কমিশন সূত্র জানাচ্ছে, এসআইআর শুরুর আগে থেকেই এমন খোঁজখবর শুরু করে এফআরআরও। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে গত কয়েক মাসে দেড় হাজার এমন ভোটার কার্ড বাতিল হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট কোনও সম্প্রদায়ের মানুষ এই ভাবে ভোটার কার্ড করিয়েছেন, তা নয় বলে কমিশন সূত্র স্পষ্ট জানিয়েছে।

    তৃণমূল যখন বিরোধী দল ছিল, তখন এ রাজ্যে অনুপ্রবেশ নিয়ে সরব ছিল তারা। অভিযোগ তুলেছিল, বহিরাগতদের ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে ভোটার তালিকাতেও। তৃণমূল এখন এ রাজ্যের শাসকদল। অথচ একই অভিযোগ বিরোধী দলগুলির। প্রশ্ন উঠছে, অসাধু ভাবে এ দেশের ভোটার বা আধার কার্ড তৈরি করা হচ্ছে কী ভাবে। এসআইআরের এই পর্বে এই প্রশ্নেই চাপ বাড়ছে জেলা প্রশাসনগুলির (প্রধানত সীমান্তবর্তী) উপর। কারণ, যে সব তথ্যের ভিত্তিতে আধার বা ভোটার কার্ড তৈরি হয়, তা মূলত পাওয়া যায় স্থানীয় প্রশাসনের থেকেই। এ রাজ্যে এসআইআর শুরুর পর থেকে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্মের শংসাপত্র সংগ্রহের প্রবণতা বেড়েছে। কোন জেলায় অনলাইন বা অফলাইনে এমন কাজ হচ্ছে, সেই তথ্য চেয়েছিল কমিশন। তাদের সন্দেহ, অসাধু উপায়ে যাতে এই শংসাপত্র কেউ না পায়। তাই জেলা প্রশাসনগুলির উপর চাপ বাড়িয়েছে কমিশন। অনলাইন বা ডিজিটাল মাধ্যমে এসআইআর সংরক্ষিত থাকায়, তার প্রতিটা ধাপ ধরা থাকবে চিরকাল। ফলে তালিকায় ভুয়ো নাম ধরা পড়লে, কার হাত দিয়ে অনুমোদন হয়েছিল, তা বার করা সহজ। তখন আইনের কড়া প্রয়োগ হতেই পারে সংশ্লিষ্টের বিরুদ্ধে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)